ইরানের অস্থিতিশীল কর্মকান্ড পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে

ফাইল ছবি- যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র দপ্তরে বক্তব্য রাখছেন।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার “কঠোরতম ভাষায়” ইরাকের কুর্দিস্তানে ইরানের সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়েছে । ইরানের ইসলামী রেভলিউশনারী গার্ড কোর খোলাখুলিভাবে হামলার দায় স্বীকার করে । তারা দাবি করে যে তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল ইসরাইলের "কৌশলগত কেন্দ্রসমূহ”।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জেইক সালিভ্যান এক বিবৃতিতে জানান, এই হামলার "কোনো যুক্তি নেই"। তিনি আরো লিখেছেন "যুক্তরাষ্ট্র সার্বভৌম ইরাক ও তার কুর্দিস্তান অঞ্চলের ওপরে হামলার নিন্দা জানাতে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা খাদিমি এবং কুর্দিস্তান অঞ্চলের নেতা, প্রেসিডেন্ট নেচিরভান বারজানি এবং প্রধানমন্ত্রী মাসরুর বারজানি'র পাশে থাকবে। আমরা ইরানকে জবাবদিহি করতে ইরাকের প্রতি সহায়তা প্রদান করবো"।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সিনেটে সাম্প্রতিক সাক্ষ্যদানকালে যুক্তরাষ্ট্র সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার, জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি বলেন, "ইরান সমগ্র (মধ্যপ্রাচ্য) অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হয়ে থাকবে"। তিনি উল্লেখ করেন, ইরান তার অনুগত দল ও সহযোগীদের সহায়তায় ইয়েমেনের সংঘাতকে আরব উপদ্বীপ হয়ে সমগ্র ইরাক ও সিরিয়া পেরিয়ে লেবাননে উস্কে দিচ্ছে। জেনারেল ম্যাকেঞ্জি ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ও কর্মক্ষমতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি , তাদের ইউএ ভি কর্মসূচি, দূর-পাল্লার ড্রোন এবং স্থল আক্রমণের ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্র কর্মসূচির উন্নয়নে” উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ইরাকে সাম্প্রতিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তোলার তাদের কর্মকান্ড স্পষ্টতই প্রমাণ করে যে কেন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরান পরমাণু চুক্তি বা জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন এ ফিরে আসাটা উভয়ের জন্যই কাঙ্খিত ও জরুরি।

নেড প্রাইস বলেন, "ইরান থেকে আমরা যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি বা করবো, তা সে তার অনুগত দলগুলোর প্রতি সমর্থন হোক, সন্ত্রাসী দলগুলোর প্রতি তাদের সহায়তা বা তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি হোক, ইরান যদি পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হয়, তবে তা ,মোকাবেলা আরো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে"। মুখপাত্র প্রাইস বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন বা জেসিপিওএ’তে পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে ফিরে এসে আমরা ইরানের পরমাণু কার্যক্রমের ওপর আবার স্থায়ী ও যাচাইযোগ্য সীমা বেঁধে দিতে পারি, যাতে করে ইরান কখনোই পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে সক্ষম না হয়"।

তিনি ঘোষণা করেন, "প্রথমেই যে জিনিসটি আমরা করতে চাই, তা হলো ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে একটি গন্ডিতে আবদ্ধ করা এবং সেই চ্যালেঞ্জটিকে আলোচনার টেবিল থেকে সরিয়ে নেয়া, যাতে করে মিত্র ও শরিকদের সঙ্গে ইরানের অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলো আমরা যথার্থভাবে মোকাবেলা করতে পারি"।

(এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতির প্রতিফলন রয়েছে)