রাশিয়ার অন্যতম অস্ত্র বিভ্রান্তিকর তথ্য নিরপেক্ষকরণ

রাশিয়ার অপতথ্য

বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার রাশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘন ঘন ব্যবহৃত অস্ত্র। এটি বিভিন্ন দেশের সরকারকে অস্থিতিশীল করার এবং মানুষের মধ্যে সন্দেহের বীজ বপন করার একটি সহজ ও সস্তা উপায়। রাশিয়ার সরকার একটি অপপ্রচার এবং প্রচারণার জাল সৃষ্টি করেছে, যা ক্রেমলিনের উদ্দেশ্য পূরণে মিথ্যা কাহিনি তৈরি করে এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়। বিশ্বব্যাপী যেকোনো ঘটনা বা নীতি অপপ্রচার ও বিকৃতির মাধ্যমে বিপদজনক অস্ত্রে পরিণত হতে পারে।

ইদানীং ইউক্রেনের ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ২০২১ সালের শেষের দিকে এবং ২০২২ সালের শুরুর দিকে ইউক্রেনে হামলা চালানোর প্রস্তুতি হিসেবে রাশিয়ার এই তথ্যযুদ্ধ সর্বোচ্চ মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন,“আমরা ইউক্রেন, নেটো ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর একটি উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা (প্রত্যক্ষ করেছি)”।

এর মধ্যে রয়েছে সামাজিক মাধ্যমে হঠকারী কর্মকাণ্ড, অনলাইন প্রক্সি গণমাধ্যমগুলোর প্রকাশ্য ও গোপন ব্যবহার, টিভি ও রেডিও প্রোগ্রামিংয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য সম্প্রচার, অংশগ্রহণকারীদেরকে মিথ্যাভাবে বিশ্বাস করার জন্য পরিকল্পিত সভার আয়োজন করা, যে রাশিয়া নয় বরং ইউক্রেন আঞ্চলিক উত্তেজনার জন্য দায়ী। এ ছাড়া রয়েছে সাইবার অপারেশনগুলোর সাহায্যে গণমাধ্যমগুলো বিকৃত করা এবং “হ্যাক ও রিলিজ” কার্যক্রম পরিচালনা করা, যেটা আসলে হ্যাকিং এবং তারপরে ব্যক্তিগত তথ্য ও কে কোথায় যোগাযোগ করেছে তার তথ্য প্রকাশ করা৷

মিথ্যা তথ্য, অপপ্রচার ও সত্যের বিকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করার একমাত্র উপায় হলো সত্য বলা—বিভ্রান্তিমূলক দাবিগুলো প্রতিষ্ঠা পাওয়ার আগেই তা খণ্ডন করা, প্রচার হয়ে যাওয়ার পরে ভুল ধারণাগুলো সংশোধন করা এবং তাদের মিথ্যা দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করতে প্রতিনিধি ও প্রক্সিকারীদের মুখোশ উন্মোচন করা।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অপপ্রচার মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের মিত্ররা তাই করেছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন “আমরা মস্কোতে একটি রাজনৈতিক মঞ্চ দেখেছি—কোনো প্রমাণ ছাড়াই উদ্ভট ও ভিত্তিহীন দাবি করা হয়েছে যে, ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যুদ্ধ শুরু করতে চলেছে, ইউক্রেন রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত বা ইউক্রেন গণহত্যা চালিয়েছে”, সুতরাং, “আমরা বিশ্বের সামনে ঘটনা প্রকাশ করেছি”।

আমরা রাশিয়ার পরিকল্পনা এবং সাইবার আক্রমণ ও মিথ্যা অজুহাত সম্পর্কে গোপন প্রমাণ প্রদর্শন করেছি যাতে পুতিনের কার্যকলাপ সম্পর্কে কোনো বিভ্রান্তি বা গোপনীয়তা না থাকে”।

রাশিয়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে জনসাধারণের কাছে গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করা একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ যা ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তার পূর্বপরিকল্পিত, অনাকাঙ্খিত ও অযৌক্তিক যুদ্ধের পেছনে উপস্থাপিত বিভ্রান্তিকর অজুহাত স্থাপনের প্রচেষ্টাকে ভেস্তে দেয়।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন,“সত্য ও মিথ্যা দুটিই বিদ্যমান। ক্ষমতার জন্য এবং লাভের জন্য মিথ্যা বলা হয় এবং আমাদের প্রত্যেকের একটি দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে, ... সত্যকে রক্ষা করা এবং মিথ্যাকে পরাস্ত করা”।

[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে]