আমাদের সময়ের বৃহত্তম বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা সংকট বিষয়ে ব্লিংকেনের মন্তব্য

ফাইল ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকন, পররাষ্ট্র দপ্তর , জুন ২,২০২২।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, বিগত পাঁচ বছরে “চরম খাদ্য নিরাপত্তহীনতায় থাকা মানুষের সংখ্যা … বিশ্বজুড়ে ১০ কোটি ৮০ লক্ষ থেকে বেড়ে ১৬ কোটি ১০ লক্ষে পৌঁছে গিয়েছে। এবং সেটা ছিল ইউক্রেনে রাশিয়ার সরকারের অপ্ররোচিত আক্রমণের আগে। সেই আক্রমণ বিশ্বব্যাপী আরও ৪ কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ফেলতে পারে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, “কেউ কেউ সংকটকে আরও গুরুতর করার জন্য রাশিয়ান ফেডারেশনের উপর যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য আরও অনেক দেশের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করতে চেয়েছেন।”

“এটা মিথ্যা। যুদ্ধ যথাসম্ভব দ্রুত শেষ করার জন্য আমরা যখন রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করি, তখন আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে ও সতর্কতার সাথে কৃষিপণ্য ও সারকে এর আওতার বাইরে রাখি। দেশগুলোকে তাদের প্রয়োজনীয় যে কোন তথ্য বা সহযোগিতা প্রদান করতে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি, যাতে করে এটা নিশ্চিত করা যায় যে নিষেধাজ্ঞাগুলো খাদ্য বা সারকে ইউক্রেন, রাশিয়া, বা অন্য যে কোন জায়গা থেকে আসতে বাধা প্রদান না করে।”

মে মাসের শেষের দিকে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বিষয়ক এক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বক্তব্য রাখার সময়ে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন সংকট অবসানে চার-স্তর বিশিষ্ট একটি প্রক্রিয়ার সুপারিশ করেন।

“প্রথমত, আমাদের দরকার হল যে, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলা করতে থাকা মানবিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো যে ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে, তা পূরণ করতে দেশগুলোর উল্লেখযোগ্য নতুন সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসা। এই ঘাটতির ফলে মানবিক গোষ্ঠীগুলো বাধ্য হচ্ছে এমন দুঃখজনক সিদ্ধান্ত নিতে, যে কখন এবং কোথায় জীবনরক্ষাকারী সহায়তা কমাতে হবে।”

উদাহরণের মাধ্যমে পথপ্রদর্শন করে যুক্তরাষ্ট্র জরুরি খাদ্য সহায়তার জন্য, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে দেওয়া ২৩০ কোটি ডলারের সাথে, আরও অতিরিক্ত ২১ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার যোগ করবে।

দ্বিতীয়ত আমাদের বৈশ্বিক সার সংকটের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।

“আফ্রিকার কথা ধরুন, যেখানে কিনা মহামারী আরম্ভের পর থেকে সারের দাম ইতোমধ্যেই চারগুণ হয়ে গিয়েছে এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা মোকাবেলা করার একটা উপায় হল, দেশগুলোতে আরও সার উৎপাদন করতে প্রণোদনা প্রদান করা, যেটা কিনা যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ৫০ কোটি ডলারের অঙ্গীকার প্রদান করার মাধ্যমে করছে।”

তৃতীয়ত, আমাদের অবশ্যই কৃষি সক্ষমতা ও সহনশীলতার পেছনে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র আগামী পাঁচ বছরে ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে।

“চতুর্থত, আমরা বিশ্বাস করি যে, আমাদের দরিদ্র ও দুর্বল জনগোষ্ঠীদেরকে এই সংকটের ব্যাপক প্রভাব সহ্য করতে সহায়তা করতে হবে।”

সবশেষে, আমাদের অবশ্যই আরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অধিক শস্য বোনার অতিরিক্ত ঝুঁকি গ্রহণ করতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, “আমরা যদি সম্মিলিতভাবে এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করি … আমরা এই সংকটের মোকাবেলা করতে পারব, আমরা এ ধরণের অন্যান্য সংকট ঠেকাতে সাহায্য করব, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো , আমরা অগণিত জীবন বাঁচাব।” তিনি আরও বলেন, “এখানেই ঝুঁকিটা, কিন্তু আমি নিশ্চিত যে আমরা যদি একসাথে হই, [তাহলে] আমরা এই চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে পারব।”

[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে]