পশ্চিম গোলার্ধে খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়ন

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ( ফাইল ছবি)

এক বছর ধরে জ্বালানী ও খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বৈশ্বিক মহামারীর কারণে সৃষ্ট বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তন, এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে ও পশ্চিম গোলার্ধে খাদ্যমূল্যকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করছে। ফলস্বরূপ পশ্চিম গোলার্ধে অনেকেই এক প্রজন্মের মধ্যে খাদ্যের সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির মুখোমুখি হচ্ছেন।

লস অ্যাঞ্জেলসে অনুষ্ঠিত সামিট অফ দ্য আমেরিকাস-এ প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও সহযোগীরা মানবিক, খাদ্য নিরাপত্তা, ও বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাসে সহায়তার জন্য ৩৩ কোটি ১০ লক্ষ ডলারের ঘোষণা দেন।

২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ৯ কোটিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ভেনেজুয়েলার মানবিক, অর্থনৈতিক, ও রাজনৈতিক সংকটের কারণে দেশটির জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ভুগছে এবং শিশু অপুষ্টির হারকে জরুরি অবস্থায় এনে দাঁড় করিয়েছে। দেশটিতে ৫ বছরের নিচের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শিশুর মধ্যে অপুষ্টির লক্ষণ দেখা দিয়েছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে যে, ২০২১ এর শেষদিকে হন্ডুরাসে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন মানুষের সংখ্যা মাত্র এক বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এর কারণগুলোর একটি হল ২০২০ সালের হেমন্তে ঐ অঞ্চলে আঘাত হানা দুইটি বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হারিকেন।

যুক্তরাষ্ট্র এমন বিনিয়োগ বৃদ্ধি করছে, যেগুলো ঐ অঞ্চলে দারিদ্র ও খাদ্য অভিঘাত হ্রাস করে। এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কাজ করা, যাতে করে এলাকাগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ক্ষেত্রে দ্রুত সাড়া জাগানো যায়, যার মধ্যে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জন্য সহায়তাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; মুক্তবাণিজ্য সম্প্রসারণ করা; সারের স্বল্পতা মোকাবেলা করা; খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা করা; এবং ভবিষ্যতের জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু ‍কৃষিতে বিনিয়োগ করা।

বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ খাদ্যই আমেরিকা মহাদেশীয় অঞ্চলে উৎপাদিত হয়। বর্তমান বৈশ্বিক খাদ্য সংকট, এই অঞ্চলের জন্য, এগিয়ে এসে বিশ্বের পণ্যের আরো অধিক অংশ সরবরাহ করার একটি সুযোগ ও দায়িত্ব। রফতানির জন্য খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সারের উৎপাদন ও পরিবহন বৃদ্ধি, এবং প্রযুক্তিগত সমাধান ও তথ্য আদানপ্রদানের মাধ্যমে কৃষির উৎপাদন সক্ষমতার উন্নয়নে একসাথে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের ‍নিযুক্ত করবে।

গোলার্ধজুড়ে খাদ্য ও মানবিক সহায়তার জন্য ৩৩ কোটি ১০ লক্ষ ডলারের সহায়তা ছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলজুড়ে দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং দুর্যোগ মোকাবিলা জোরদার করবে। এর মধ্যে রয়েছে, আগাম সতর্ক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং প্রাথমিক সাড়াদানকারীদের প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান এবং সমাজভিত্তিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা দলগঠন।

ইউএসএআইডি সহযোগীদের মাধ্যমে, হাইতিতে খাদ্যের সাথে সাথে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, আশ্রয়, নিরাপত্তা পরিষেবা এবং ঝুঁকিতে থাকা জনসংখ্যার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় অগ্রাধিকার দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহত রেখেছে। মধ্য-আমেরিকায়, বিশেষ করে এল সালভাদোর, হন্ডুরাস, গুয়াতেমালায় ইউএসএআইডি জরুরি খাদ্য, জীবিকা, ও নিরাপত্তা সহায়তা সরবরাহ করছে।

[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে]