দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার লৌহকঠিন

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস (ডানে) দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হ্যান ডাক সু র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করছেন । টোকিও সেপ্টেম্বর ২৭,২০২২।

রিপাবলিক অফ কোরিয়ায় (আরওকে) ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের সাম্প্রতিক সফরের শুরু ও শেষটা হয়, ডেমোক্রেটিক পিপল’স রিপাবলিক অফ কোরিয়া বা ডিপিআরকে’র ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে। এধরণের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ আবারও চালু হওয়া, এবং একইসাথে, উত্তর কোরিয়ার আরেকটি পারমাণবিক পরীক্ষার সম্ভাবনা, উত্তর কোরিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ডগুলো সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগগুলোকেই স্পষ্টভাবে মনে করিয়ে দেয়।

রাজধানী সোওল-এ রিপাবলিক অফ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়োল-এর সাথে তার বৈঠকের সময়ে, ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্র ও রিপাবলিক অফ কোরিয়ার মধ্যকার জোটের শক্তিশালী ও টেকসই বৈশিষ্ট্য গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেন। তিনি সেটিকে “ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ও বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তা ও উন্নয়নের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে” আখ্যায়িত করেন। রিপাবলিক অফ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা ও দুই দেশের সমন্বিত প্রতিরক্ষা অবস্থান জোরদার করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

কোরিয়ার ডিমিলিটারাইজড জোন অর্থাত্ বেসামরিকীকৃত অঞ্চল সফর শেষে বক্তব্য দেওয়ার সময়ে, ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস রিপাবলিক অফ কোরিয়ার প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের “লৌহকঠিন” অঙ্গীকারের বিষয়টিতে জোর দেন, যেই অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে “যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণমাত্রার সামরিক সক্ষমতার ব্যবহার”।

ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন যে, দুই দেশের মধ্যকার জোট “নির্মম কোরিয়া যুদ্ধের সময়ে অভিন্ন ত্যাগের মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে … স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য আমেরিকান ও কোরিয়ানরা একসাথে লড়াই করেছে ও মৃত্যুবরণ করেছে। কোরিয়ায় যুদ্ধবিরতির প্রায় ৭০ বছর পরও সংঘাতের হুমকি থেকে গিয়েছে। এবং সেটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যে কোন আকস্মিকতা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ও রিপাবলিক অফ কোরিয়ার জোটটি প্রস্তুত রয়েছে।”

বিগত সাত দশকে ডিপিআরকে ও আরওকে যেই “নাটকীয় ভিন্নপথ” অবলম্বন করেছে, সেই বিষয়ে মন্তব্য করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস: “দক্ষিণে আমরা দেখি একটি সমৃদ্ধ গণতন্ত্র, উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ও শক্তি – শক্তির একটি কেন্দ্র … এবং বিশ্ব মঙ্গলের পক্ষের এক শক্তি। উত্তরে আমরা দেখি একটি নির্মম স্বৈরাচার, নির্বিচারে মানবাধিকার লঙ্ঘন, এবং অবৈধ এক অস্ত্র কর্মসূচি যা শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে হুমকিতে ফেলে।”

ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও রিপাবলিক অফ কোরিয়া, উভয়েরই কোরিয় উপদ্বীপে সম্পূর্ণরূপে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি ঘোষণা দেন, বিশ্বও একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ কোরিয় উপদ্বীপ চায়, “যেখানে ডিপিআরকে আর কোন হুমকি নয়। এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ও শান্তি বজায় রাখতে, আমরা এখানে সহ সবখানে অবস্থিত আমাদের সহযোগীদের পাশাপাশি কাজ করা অব্যাহত রাখব।”


[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে]