গণতন্ত্র এবং এক ডিজিটাল বিশ্ব

ফাইল , যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

সাম্প্রতিক ইউএস-জার্মান ফিউচারস ফোরামে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং জার্মানীর পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবক, একটি ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বিশ্বে গণতান্ত্রিক সমাজের মূল্যবোধ বিষয়ে এক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন উল্লেখ করেন যে, তারা দুইজনই এই বিষয়ে সম্মত হয়েছেন যে, প্রযুক্তি “হয় আমাদের গণতন্ত্রকে অগ্রসর করে বা সেটিকে অবদমিত করে;” এবং প্রথমটি অর্জন করার একমাত্র আশা হল একই ধরণের চিন্তাধারার দেশগুলোর একসাথে কাজ করা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, “স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী যুগটি অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। আগামীতে যা আসবে সেটিকে কিভাবে কাজে লাগানো হবে সে বিষয়ে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে, এবং প্রযুক্তি সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।”

“সেটি আমাদের অর্থনীতিকে পুনর্বিন্যাস করবে, সেটি আমাদের সামরিক বাহিনীতে সংস্কার আনবে, সেটি আক্ষরিক অর্থেই আমাদের জীবনকে পুনর্বিন্যস্ত করবে।”

সেই পুনর্বিন্যাসটি কেমন হবে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানীর একসাথে “একটি ইতিবাচক, সম্মতিসূচক দর্শন রয়েছে”।

“সেটি রোগমুক্তির নতুন নতুন পথ আবিষ্কার সম্পর্কিত। সেটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা যাতে আসলেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা নিশ্চিত করতে পারি, তার সাথে সম্পর্কিত। সেটি আমরা যাতে জীবাশ্ম জ্বালানীর উপর নির্ভরশীল না হয়ে আমাদের সমাজকে শক্তি সরবরাহ করতে পারি, সেটি নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত। সেটি আমরা যাতে বিশ্বব্যাপী টেকসই ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারি, তার সাথে সম্পর্কিত।”

কিন্তু প্রযুক্তিকে মানুষের বিরুদ্ধে “ব্যাপকভাবে অপব্যবহার” করা যায় বলে, মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন।

“তাদের গোপনীয়তা হরণ করতে, তাদের মানবাধিকার দমন করতে, মানুষজনকে আক্ষরিক অর্থে অনলাইনে হয়রানি করতে, বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘুদের…অপতথ্য ও মিথ্যা তথ্য ছড়াতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, যা কিনা, দূর্নীতির সাথে মিলে, আমার মনে হয় যে কোন গণতন্ত্রের সবচেয়ে ক্ষতিকারক দুইটি জিনিস। এবং অবশ্যই নিরাপত্তা বিষয়ে প্রগাঢ় প্রশ্ন রয়েছে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, কোন একক দেশই একা এসব চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে পারবে না। সহযোগিতা ও সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণরূপে মান নির্ধারণে এবং প্রযুক্তিগত ও ডিজিটাল জগতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সঞ্চার করার ক্ষেত্রে – যা কিনা, তার ভাষ্যমতে, “যখন প্রযুক্তি কিভাবে ব্যবহার হবে সে প্রশ্ন আসে, তখন শিখরে পৌঁছনোর প্রতিযোগিতা [সৃষ্টিতে], নিচে পৌছানোর প্রতিযোগিতা [সৃষ্টিতে] নয়”।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন উল্লেখ করেন যে, ইউএস-জার্মান ফিউচারস ফোরামটি মুয়েন্সটার শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা কিনা প্রসিদ্ধ হ্যানসেটিক লীগ এর একটি অংশ ছিল, যেটি ১৪শ শতাব্দীতে তৈরি হয়েছিল। লীগটি ইউরোপজুড়ে বাণিজ্যিক পথ তৈরির্ এক প্রচেষ্টা ছিল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, এর মাধ্যমে “মানুষের মাঝে সংযোগ হবে, পণ্যের সংযোগ হবে, ভাবনার সংযোগ হবে। এবং তার সর্বোত্তম অবস্থায়, ডিজিটাল জগৎটাও তেমনই। সহজাতভাবে প্রযুক্তি ভাল বা খারাপ, কোনটিই নয়। আমরা সেটি কি ভাবে কাজে লাগাব, এবং সেটিই আমাদের অভিন্ন চ্যালেঞ্জ।”


[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে]