মধ্য আফ্রিকার আইএসআইএস একটি ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি

মধ্য আফ্রিকার মানচিত্র।

যুক্তরাষ্ট্র এবং আইএসআইএসকে পরাজিত করার জন্য গ্লোবাল কোয়ালিশনের অংশীদাররা ইরাক এবং সিরিয়ায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পুনরুত্থান প্রতিরোধ করার দিকে মনোনিবেশ করছে। সাব-সাহারান আফ্রিকাসহ অন্যত্র আইএসআইএস যে বিপদ ডেকে আনছে সে ব্যাপারেও তারা ভালোভাবে সচেতন।

২০২২ সালের গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স অনুসারে, সাব-সাহারান আফ্রিকা অর্থাত্ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। গত এক বছরে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের কারণে মৃত্যুর ৪৮ শতাংশ এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ব্রিফিং-এ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাডভাইজার ফর স্পেশাল পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স-এর জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জেফরি ডি লরেন্টিস উল্লেখ করেছেন, “আইএসআইএস এবং আল-কায়েদার সহযোগীরা তাদের অবৈধ কার্যকলাপকে শক্তিশালী করার জন্য আফ্রিকার দীর্ঘদিন ধরে চলমান দ্বন্দ্বকে কাজে লাগাচ্ছে, যা অত্যন্ত উচ্চ মাত্রায় প্রাণঘাতী। ”

এই বছরের শুরুর দিকে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে দুটি হামলায় প্রাণাঘাতের মর্মান্তিক চিত্র দেখা গিয়েছিল। ২২ জানুয়ারি উত্তর কিভু প্রদেশের মাকুগওয়ে গ্রামে একটি হামলায় কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হয়। আইএসআইএস-ডিআরসি যা এলাইড ডেমোক্র্যাটিক ফর্সেস বা এডিএফ নামেও পরিচিত তারা হামলার দায় স্বীকার করেছে।

১৫ জানুয়ারি একই গোষ্ঠী কাসিন্দি শহরের পেন্টেকোস্টাল গির্জায় একটি বোমা হামলা ঘটায়। এতে কমপক্ষে ১৪ জন নিহত এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়। জাতিসংঘের মতে, আইএসআইএস-ডিআরসি ইসলামিক স্টেটের আফ্রিকার সবচেয়ে মারাত্মক সহযোগীদের মধ্যে একটি। ২০২২ সালের এপ্রিল মাস থেকে এটি কমপক্ষে ৩৭০ জন বেসামরিক মানুষের হত্যা এবং আরও কয়েক শতাধিক লোকের অপহরণের জন্য দায়ী। যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০২১ সালে গোষ্ঠীটিকে ইসলামিক স্টেটের সহযোগী এবং বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেছে।

এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র নেড প্রাইস আইএসআইএস-এর ঘৃণ্য কার্যকলাপের নিন্দা করেছেনঃ

তিনি বলেন, “গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোর এই অংশে বেসামরিক জনগণের ওপর তারা যে কাপুরুষোচিত আক্রমণ এবং বোমা হামলা করেছে তার জন্য আমরা ক্রমাগতভাবে আইএসআইএস-ডিআরসি-কে নিন্দা জানিয়েছি। ” তিনি আরও বলেন, “তারা একটি গির্জায় আক্রমণ করেছে; এটি তারা যা করেছে সেটিকে আরও জঘন্য এবং ঘৃণ্য করে তোলে।”

মধ্য আফ্রিকায় আইএসআইএস-কে মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আইএসআইএস-ডিআরসি নেতা এবং অর্থদাতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা শাসন, উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আফ্রিকান অংশীদারদের সাথে কাজ করছে, যেগুলো হোয়াইট হাউজের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি উপদেষ্টা লিজ-শেরউড র‍্যান্ডালের নভেম্বর মাসে নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া বক্তব্যের ওপর আলোকপাত করেঃ “আফ্রিকায় সফল একটি সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ কৌশল আমরা যে দেশগুলোকে সমর্থন করার জন্য কাজ করছি সর্বদাই সে দেশগুলোর নাগরিকদের দ্বারা এবং তাদের নেতৃত্বে গড়ে তুলতে হবে।” তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র “আফ্রিকান সরকার এবং আফ্রিকান জনগণ যারা প্রতিদিন এই হুমকি মোকাবিলা করছে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ”

[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে। ]