ইউক্রেনের শিশুদের মন্ত্রণা দেয়া এবং দত্তক নেয়ার জন্য রাশিয়ার পরিকল্পনা

ইউক্রেনে সংকটাপন্ন শিশুরা

পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ইউক্রেন এবং এর জনগণকে বশীভূত করার জন্য রাশিয়ার প্রচেষ্টার মাত্রা, সুযোগ এবং বর্বরতা বিশ্বকে আতংকিত করে চলেছে।

ক্রেমলিন ইউক্রেনের শিশুদের সাথে যা করছে বর্বরতার তার চেয়ে স্পষ্ট আর কোনো উদাহরণ নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সমর্থিত কনফ্লিক্ট অবজার্ভেটরি প্রোগ্রামের অর্থায়নে ইয়েল ইউনিভার্সিটির হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাবের সদ্য প্রকাশিত স্বাধীন একটি প্রতিবেদনে ইউক্রেনের হাজার হাজার শিশুকে তাদের পরিবার বা অভিভাবকদের কাছ থেকে রুশ সরকারের অধীনে ইউক্রেনের এলাকায় বা খোদ রাশিয়ায় ৪৩টি ক্যাম্প এবং অন্যান্য স্থাপনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থানান্তরিত করার রাশিয়ার পদ্ধতিগত সরকার-ব্যাপী প্রচেষ্টার বিবরণ দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৭৫ শতাংশ শিবিরকে মন্ত্রণা দানের কেন্দ্র বলে মনে হচ্ছে, যা ইউক্রেনের শিশুদেরকে “রাশিয়া-কেন্দ্রিক একাডেমিক, সাংস্কৃতিক, দেশপ্রেম এবং/অথবা সামরিক শিক্ষার সাথে পরিচিত করায়……রাশিয়ার সরকারের জাতীয় সংস্কৃতি,ইতিহাস এবং সমাজের লক্ষ্যের সাথে ইউক্রেনের শিশুদের একীভূত করার উদ্দেশ্যে”

নেড প্রাইস উল্লেখ করেছেন, “অনেক ক্ষেত্রে রাশিয়া অবৈতনিক গ্রীষ্মকালীন শিবিরের আড়ালে ইউক্রেনের শিশুদের সাময়িকভাবে সরিয়ে নেয়ার কথা বলেছিল, পরে তারা শিশুদেরকে ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তাদের পরিবারের সাথে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে।”

“এই ধরনের ক্রিয়াকলাপ স্পষ্টতই এই শিশুদের বিকাশে গুরুতর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে। এই শিশুদের যে্সব শিবিরে পাঠানো হয় সেগুলোর নেটওয়ার্ক বিশাল, রাশিয়া-অধিকৃত ক্রাইমিয়া থেকে রাশিয়া জুড়ে, কৃষ্ণ সাগর অঞ্চল থেকে এর দূরপ্রাচ্য পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রতিবেদনটি ইঙ্গিত করে, কীভাবে এই অপমানজনক অনুশীলনগুলোর সঙ্গে রাশিয়া সরকারের সকল স্তরের কর্মকর্তা এবং অন্যান্য ব্যক্তিরা জড়িত।”

যেমনটি প্রেসিডেন্ট বাইডেন সম্প্রতি বলেছেন, রাশিয়া “ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ চুরি করার জন্য ইউক্রেনের শিশুদেরকে চুরি করেছে।”

“রাশিয়ার জোরপূর্বক স্থানান্তর, পুনঃশিক্ষা এবং ইউক্রেনের শিশুদের দত্তক নেয়ার ব্যবস্থা হলো ইউক্রেনের পরিচয়, এর ইতিহাস এবং সংস্কৃতিকে অস্বীকার ও দমন করার ক্রেমলিনের পদ্ধতিগত প্রচেষ্টার একটি মূল উপাদান। রাশিয়ার ব্যর্থ আগ্রাসন যুদ্ধের বিধ্বংসী প্রভাব আগামী প্রজন্মের মধ্যে অনুভূত হবে।”

ইয়েল ইউনিভার্সিটির প্রতিবেদন এবং এর মতো অন্যান্য প্রতিবেদনে ইউক্রেনে রাশিয়ার বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ এবং অন্যান্য নৃশংসতার জবাবদিহিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এবং আন্তর্জাতিক সংকল্পকে শক্তিশালী করে। যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইউক্রেন এবং এর জনগণের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। যতদিন সময়ই লাগুক তারা এই জঘন্য কাজের বিচার চাইবে।

এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামতকে প্রতিফলিত করে এমন একটি সম্পাদকীয়।