আরও দুর্ভোগের কবলে বার্মার রাখাইন রাজ্য

পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুথিডাং-এ একটি চেকপয়েন্টে নিরাপত্তা প্রদান করার সময় একজন মিয়ানমার পুলিশ অফিসার রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন, ২৮ মে, ২০১৭।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র [বার্মার] রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বৃদ্ধি এবং আন্তঃসাম্প্রদায়িক উত্তেজনার খবরে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, এর মধ্যে শহর পুড়িয়ে দেওয়া এবং রোহিঙ্গা সহ সেখানকার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার খবরও রয়েছে। এই ঘটনাগুলোর সাথে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে যোগদান করানো, সেই সাথে বিভ্রান্তি, ভুল তথ্য এবং বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার মত উদ্বেগজনক খবর এসেছে।”

মুসলিম জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা ২০১৭ সাল থেকে ভয়াবহ সহিংসতার শিকার, যখন বার্মিজ সামরিক বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যামূলক অভিযান শুরু করে। সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। দেশটির সামরিক বাহিনী ২০২১ সালে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করার পর তাদের সরকার নৃশংসভাবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে দমন করে। ফলশ্রুতিতে, দেশটিতে সশস্ত্র প্রতিরোধ বৃদ্ধি পায় এবং তার সাথে দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পরে।

আবারও, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গারা দুর্ভোগে ভুগছে, এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে সহিংসতার কারণে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। যখন দেশটির সরকারের সামরিক বাহিনী বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সাথে লড়াই করে, তখন বুথিডাং শহর এবং তার আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, যা হাজার হাজার রোহিঙ্গার আবাসস্থল।

মুখপাত্র মিলার উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে বার্মিজ সামরিক বাহিনীর পূর্বের গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অন্যান্য অপরাধ, সেই সাথে দেশটির সরকারের রাখাইন রাজ্য এবং অন্যত্র আন্তঃসাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির মতন ইতিহাস, বেসামরিক নাগরিকদের উপর মারাত্মক ঝুঁকি প্রকাশ করে।

তিনি বলেন, “আমরা বার্মার সামরিক বাহিনী, সেইসাথে সকল সশস্ত্র গোষ্ঠীদের প্রতি বেসামরিক জনগণকে রক্ষা করার জন্য এবং নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই। আমরা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের এই সহিংসতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে নিন্দা করতে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধীদের জবাবদিহিতার জন্য ব্যবস্থা নিতে এবং ভবিষ্যত নৃশংসতা প্রতিরোধে যারা সহিংসতা থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে তাদের নিরাপত্তা প্রদান করতে উত্সাহিত করছি।”

মিলার ঘোষণা করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ভুক্তভোগী এবং বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতি ন্যায়বিচারের জন্য, সেই সাথে নৃশংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং সামরিক এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী যারা নির্যাতন করে, তাদের উপর মূল্য আরোপ করবে।”

(এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)