উত্তর কোরিয়ার গণবিধ্বংসী অস্ত্র লাভের অব্যাহত প্রচেষ্টা এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে কিম জং উন শাসিত উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগুলো ৪, ১০, ১৪, ১৭ এবং ২৭ জানুয়ারি সংঘটিত হয়েছে। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত যুক্তরাষ্ট্র, আলবেনিয়া, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড ও জাপান এবং যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন, যেখানে সতর্ক করে বলা হয়েছে, “প্রত্যেকটি অস্ত্র পরীক্ষা শুধু উত্তর কোরিয়ার সামরিক সক্ষমতার বৃদ্ধির সঙ্গেই সম্পর্কিত নয়, এর মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র ক্রেতা এবং ব্যবসায়ীদের কাছে রপ্তানির জন্য অস্ত্রভাণ্ডার সমৃদ্ধ করারও একটা চেষ্টা চালাচ্ছে দেশটি”।
জাতিসংঘের একাধিক প্রস্তাবে নেওয়া নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী উত্তর কোরিয়া (ডিপিআরকে) অস্ত্রের মহড়া চালিয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র গণবিধ্বংসী অস্ত্র বিস্তার ও বিতরণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য পরিচালিত নির্বাহী আদেশ ১৩৩৮২–এর অধীনে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত আটজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
সুনির্দিষ্টভাবে, এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে উত্তর কোরিয়ার একজন নাগরিক, রাশিয়ার একজন নাগরিক এবং রাশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান, যারা এক সাথেই উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তি সরবরাহে উত্স হিসেবে কাজ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার অধীনস্থ উত্তর কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের চীন ও রাশিয়াভিত্তিক পাঁচজন উত্তর কোরীয় নাগরিকের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তারা সকলে উত্তর কোরিয়ার অত্যাধুনিক অস্ত্র উৎপাদন ও গবেষণা নিয়ে কাজ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ উত্তর কোরিয়াকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র (WMD—Weapon of mass destruction) এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি থেকে বিরত রাখবে এবং পিয়ংইয়ংকে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির বিস্তারে বাধা প্রদান করবে।
গত পাঁচ মাসে উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সূত্র ধরেই যুক্তরাষ্ট্র নতুন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
“আমরা ক্রমাগত আমাদের মিত্র রাষ্ট্র এবং অংশীদারদের সঙ্গে মিলে উত্তর কোরিয়ার অস্থিতিশীল কার্যকলাপের মাধ্যমে উদ্ভূত ঝুঁকির বিষয়ে এবং আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় কোরীয় উপদ্বীপ অঞ্চলকে সম্পূর্ণ পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করা নিয়ে আলাপ করে আসছি”, বলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
“আমরা জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানাচ্ছি”।
“আমরা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বদ্ধপরিকর এবং আমরা আশা করি দেশটি কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই আলোচনার প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেবে”।
“উত্তর কোরিয়াকেই অবৈধ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যক্রম বন্ধ করে আলোচনার ও শান্তির পথ বেছে নিতে হবে”।
[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতির প্রতিফলন রয়েছে]