Accessibility links

Breaking News

প্রেসিডেন্ট দিবস-২০২২  


ক্যালিফোর্নিয়ায় দ্যা রিচার্ড নিক্সন প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরি অ্যান্ড মিউজিয়ামের ২০১৪ সালের প্রেসিডেন্ট দিবস উদযাপনের ছবি। (এপি)
ক্যালিফোর্নিয়ায় দ্যা রিচার্ড নিক্সন প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরি অ্যান্ড মিউজিয়ামের ২০১৪ সালের প্রেসিডেন্ট দিবস উদযাপনের ছবি। (এপি)

ফেব্রুয়ারী মাসের তৃতীয় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ প্রেসিডেন্ট দিবস উদযাপন করেন। প্রথমে এই দিনটি উদযাপিত হতো আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের স্মরণে । ১৮০০ সালের শুরুতে, তাঁর মৃত্যুর পরের বছর, ২২শে ফেব্রুয়ারী নতুন দেশটি জুড়ে বেসরকারিভাবে তাঁর জন্মদিন পালিত হয়, যে দেশটি প্রতিষ্ঠায় তিনি অবদান রাখেন। পরে এই সম্মান সম্প্রসারিত করা হয় আরেক মহান নেতা, আব্রাহাম লিঙ্কনের প্রতি, যার জন্মদিন ১২ই ফেব্রুয়ারি, ওয়াশিংটনের জন্মদিনের কাছাকাছি।

জর্জ ওয়াশিংটন ও আব্রাহাম লিংকন উভয়কে প্রায় সর্বজনীনভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকালের সর্বোত্তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আর তা সম্ভব হয়েছে মূলত তাঁদেরকে ঘিরে কতকগুলি স্মরণীয় ঘটনা, এবং তাঁদের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত সততার কারণে যা তাদেরকে সুদূর-প্রসারী সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেছিল, যা দেশটিকে মজবুত, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক দেশ গড়ার পথ তৈরি করে দিয়েছিল।

জর্জ ওয়াশিংটন ছিলেন তাঁর সময়ে সবচাইতে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একমাত্র প্রেসিডেন্ট, যিনি সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রতিটি রাজ্যের প্রত্যেক প্রতিনিধি তাঁকে ভোট দেন। ওয়াশিংটন যখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন, বস্তুতঃ তখন কোন সরকার বা নেতা ছিল না যাকে তিনি মডেল হিসাবে অনুসরণ করতে পারতেন। বিশ্বের অন্য কোথাও গণতন্ত্র ছিল না। তথাপি তিনি যেসব নীতি অন্তর্ভুক্ত করতে একটি যুদ্ধে সহায়তা করেন, যেমন, সকল মানুষ সমান অধিকারের দাবিদার, সেসব নীতি মহিমান্বিত করতে তিনি অবদান রেখেছিলেন।

সংবিধান রচনা ও প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অন্যতম চালিকাশক্তি। সংবিধান হচ্ছে সেই দলিল যা সরকারের নীতিমালা, কর্মপদ্ধতি সংজ্ঞায়িত করে ও যাকে কেন্দ্র করে সরকার গঠিত হয় এবং নাগরিকদের অধিকার সংরক্ষিত হয়। নিজের নেয়া পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক ও সামরিক চর্চা এবং অর্থনৈতিক নীতির মান নির্ধারণ করেন। দুদফা মেয়াদের দায়িত্ব পালনের পর প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে তিনি এটা নিশ্চিত করেন যে, প্রেসিডেন্টের পদ সারা জীবনের জন্য স্থায়ী পদ নয় এবং প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা শান্তিপূর্ণভাবে হস্তান্তর করা হয়।

তেমনিভাবেই আব্রাহাম লিংকন সঙ্কটকালীন সময় দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ওয়াশিংটনকে যেমন নতুন দেশ গঠনে লড়াই করে যেতে হয়েছে, লিংকনের চ্যালেঞ্জ ছিল গৃহযুদ্ধকালীন সময়ে দেশটিকে পরিচালনা করা, দেশটিকে বিভক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখা এবং যুদ্ধের আগেকার সময়ের চাইতে দেশটিকে আরো মজবুত, আরো সমন্বিত হওয়ার পথে নিয়ে যাওয়া। আব্রাহাম লিংকন নতুন এক দৃষ্টান্তের সূচনা করেন, যার মাধ্যমে যে দুর্বল কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্যগুলোর শিথিল ফেডারেশনকে একত্রিত করে রেখেছিলো, তার পরিবর্তে শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকারের নেতৃত্বে রাজ্যগুলোর সত্যিকার ইউনিয়ন গঠিত হয়।

আজ প্রেসিডেন্ট দিবসের মাধ্যমে প্রত্যেক প্রেসিডেন্টের প্রতি সম্মান জানানো হয়। তবে ওয়াশিংটন ও লিংকনের মতো কেউই এতটা প্রভাব রাখতে বা এতটা সম্মান কুড়াতে পারেন নি।

[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতির প্রতিফলন রয়েছে ]

XS
SM
MD
LG