যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক বিবৃতিতে বলেছেন "ইউক্রেনের জনগণের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্ব দৃঢ় ও স্থায়ী। রাশিয়ার পূর্ব পরিকল্পিত, উস্কানিবিহিন এবং অযৌক্তিক হামলার জবাবের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে আমরা ইউক্রেনের জরুরি মানবিক চাহিদার ওপর মনোযোগ দিয়েছি”।
ইউক্রেনের সাধারণ জনগণের কল্যাণের কথা মনে রেখে রুশ আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৫ কোটি ৪০ লক্ষ ডলার মানবিক সহায়তা ঘোষণা করেছে। এই অর্থায়নে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তরের ২ কোটি ৬০ লক্ষ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা বা USAID এর ২ কোটি ৮০ লক্ষ ডলার।
ইউক্রেনে বৃহত্তম মানবিক সহায়তাকারীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম প্রধান একটি দেশ। ৮ বছর আগে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে এ পর্যন্ত ইউক্রেনের ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা প্রায় ৪০ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, "সর্বসাম্প্রতিক এই মানবিক সহায়তা দেয়া হবে স্বতন্ত্র মানবিক সংগঠনগুলির মাধ্যমে, যাতে মানবতা, নিরপেক্ষতা এবং স্বাধীনতা বজায় রেখে চাহিদাভিত্তিক সহায়তা প্রদান করা যায়”।
এই সহায়তা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ইউক্রেনের জনগণের জন্য খাদ্য, নিরাপদ পানীয় জল, আশ্রয়, জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং শীতকালীন সময়ে সুরক্ষায় সহায়তা দেবে। সংঘাতের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখতেও, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন মানবিক সংস্থাগুলোকে সাহায্য করবে এবং আশাতীতভাবে তাদের পুনর্মিলনেও সহায়তা করবে।
ইউক্রেন থেকে পালিয়ে যাওয়া জনগণকে আশ্রয় দিতে যেসব প্রতিবেশী দেশ আতিথেয়তার হাত বাড়িয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রশংসা করে এবং তাদের সীমান্ত খোলা রাখা এবং যাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা প্রয়োজন তাদেরকে সহায়তা করার প্রয়াসে সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিকভাবে আরও সম্পৃক্ত হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী এ পর্যন্ত ইউক্রেনের ৬ লক্ষ মানুষ দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া প্রথম সারির দেশগুলো হচ্ছে পোল্যান্ড, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, মোলদোভা ও স্লোভাকিয়া। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে USAID এর প্রশাসক, সামান্থা পাওয়ার বলেন, “দেশগুলো তাদের হৃদয়কে অবারিত করে, ঘরবাড়ি উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, ব্যবস্থা করা হয়েছে গরম খাবার ও অন্যান্য সরবরাহ, পিতামাতাদের জন্য ডায়পার ও স্ট্রলার এবং কাপড়”। প্রশাসক পাওয়ার বলেন, নিকট ভবিষ্যতে ‘৩০ থেকে ৫০ লক্ষ লোক’ ‘পার্শ্ববর্তী এইসব দেশে’ আশ্রয় নিতে পারেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন, যারা সুরক্ষা চাইবেন তাদের প্রয়োজনের প্রতি সাড়া দিতে এবং আশ্রয়-প্রার্থীদের যেন ইউক্রেনে ফিরিয়ে দেয়া না হয়, যেখানে তারা সম্ভাব্য বড় বিপদের মুখে পড়তে পারেন, সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এই সংকটে অন্যান্য যেসব দেশ সাড়া দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র অন্য দাতাদের অবদানকে স্বাগত জানায় এবং ইউক্রেন ও ওই অঞ্চলের মানবিক প্রয়োজনে অন্যান্যদের অবিলম্বে উদারহস্তে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানায়।
[[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামতের প্রতিফলন রয়েছে]]