২০২২ সালের ২ নভেম্বর, ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলে দুই বছরব্যাপী নৃশংস সংঘর্ষের সমাপ্তি ঘটিয়েছে বিরোধ নিবৃত্তি চুক্তি। বর্তমানে, যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসছে ইথিওপিয়া, যে-যুদ্ধচলাকালে সব দলই নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন,''ওই চুক্তি মানার জন্য এবং এর প্রয়োগে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির জন্য আমি উভয় পক্ষেরই প্রশংসা করছি। তবে,''স্থায়ী শান্তি কায়েম করতে সব দলের দ্বারা সংঘটিত নির্মমতার স্বীকৃতি প্রয়োজন, বিষয়টি মিটমাট করে সম্মিলিতিভাবে দায়ও নিতে হবে।''
''দফতর কর্তৃক আইন ও তথ্যের সতর্ক পূনর্মূল্যায়নের পর আমি নির্ণয় করেছি যে, ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলে সংঘর্ষের সময় ইথিওপিয়ো জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী, ইরিত্রিয় প্রতিরক্ষা বাহিনী, টিগ্রায় পিপলস মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী ও আমহারা বাহিনী যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছে।
হত্যা, ধর্ষণ, অন্যান্য ধরনের যৌন হিংসা ও নির্যাতন-সহ মানবতাবিরোধী অপরাধও সংঘটিত করেছে ইথিওপিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী, ইরিত্রিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী ও আমহারা বাহিনী।
আমহারা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাসন বা বলপূর্বক স্থানান্তর সংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে এবং টিগ্রায়ের পশ্চিমাঞ্চলে টিগ্রায়ের অধিবাসীদের উপর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে জাতিগোষ্ঠীগত নির্মূলীকরণ চালিয়েছে।''
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ব্লিংকেন জানিয়েছেন,''আমরা এই অঙ্গীকারকে স্বাগত জানাচ্ছি যে, বিরোধ নিবৃত্তি চুক্তিবদ্ধ দলগুলিকে নির্মমতা চালানো ও তার ভয়াবহ ফলাফলের দায় স্বীকার করে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।
শ্রেষ্ঠ নীতির ভিত্তিতে তৈরি অন্তর্বর্তী বিচার-বিকল্পের বিবরণ-সম্বলিত সবুজ পত্র জনসমক্ষে প্রকাশ করে ইথিওপিয়ার সরকার প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করছে এবং গণহিংসার পর্ব থেকে উঠে আসা অন্যান্য দেশগুলির অভিজ্ঞতা থেকে শিখছে। মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের দফতর থেকে বিশেষজ্ঞদের তারা আহ্বান জানিয়েছে ইথিওপিয়ার মানবাধিকার কমিশনে যোগ দিতে। এমন কর্মকান্ড যাতে সত্যিই বন্ধ হয় তা নিশ্চিত করতে দ্বন্দ্ববিদীর্ণ এলাকায় মানবাধিকার বিষয়ক নজরদারি দল মোতায়েন করার জন্য এই আহ্বান।''
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন,''অবশেষে, ও গুরুত্বসহকারে , এই নির্মমতার জন্য দায়ীদের দায়বদ্ধ করতে ইথিওপিয়ার সরকার, ইরিত্রিয়ার সরকার ও সেই সঙ্গে টিপিএলএফের কাছে আমরা আবেদন করছি।''
''স্বীকৃতি, দায়-স্বীকার, মীমাংসা--এই পদক্ষেপগুলি জাতিগোষ্ঠীগত ও রাজনৈতিক হিংসার চক্র ভাঙার চাবিকাঠি। এই চক্র ইথিওপিয়াকে গ্রাস করে রয়েছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে তাদের সীমাহীন সম্ভাবনায় পৌঁছতে বাধা দান করছে।''
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন বলেন,''সমস্ত নিগৃহীত ও আক্রান্ত গোষ্ঠীর সুবিধার জন্য যেহেতু বিশ্বাসযোগ্য অন্তর্বর্তী বিচারপ্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হচ্ছে, তাই ইথিওপিয়াকে সহযোগিতা করবে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা ইথিওপিয়ার সঙ্গে থাকব যেহেতু তারা অতীতে সৎভাবে নিগ্রহের মোকাবিলা করেছে, নিজেদের নাগরিকদের বিরুদ্ধে ঘটা ক্ষতির জন্য জবাবদিহি করেছে এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তিময় ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হয়েছে।''
এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিমত ব্যক্ত হয়েছে।