তিউনিসিয়া মূল্যস্ফীতি, খাদ্য ঘাটতি এবং উচ্চ বেকারত্বসহ মারাত্মক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। যে দেশে এক দশক আগে আরব বসন্ত সংঘটিত হয়েছিল, সেখানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে উন্নত জীবনের আশা ম্লান হয়ে গেছে।
আশঙ্কা রয়েছে যে, তিউনিসিয়ার অর্থনৈতিক সংকট দেশটিকে ঋণ-খেলাপিতে পরিণত করতে পারে, যা রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিতে সম্ভাব্য পতন এবং তিউনিসিয়ার জনগণকে আরও দুর্দশার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
২০২২ সালের অক্টোবরে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ এবং তিউনিসিয়ার সরকার একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল। এই চুক্তি অনুযায়ী কিছু সংস্কারের শর্তে আইএমএফ তিউনিসিয়াকে ১৯০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে; যার মধ্যে রয়েছে ময়দা এবং জ্বালানীতে ভর্তুকি কমানো। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সংস্কার সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা থমকে গেছে।
জুন মাসে তিউনিসিয়া সফরে, ইউরোপীয় নেতারা—ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন, ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি— তিউনিসিয়াকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের সম্ভাব্য প্রস্তাব ঘোষণা করেছেন: ১০০ কোটি ইউরোরও বেশি ঋণ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তিউনিসিয়া একটি অংশীদারিত্ব প্যাকেজে একসাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছে যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বাণিজ্য, জ্বালানি শক্তি, অভিবাসন এবং মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রগুলি। আশা করা যায় যে, এই ধরনের একটি প্যাকেজ তিউনিসিয়াকে আইএমএফের কাছে একটি সংশোধিত সংস্কার পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানির সাথে ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র তিউনিসিয়ার সংশোধিত সংস্কার পরিকল্পনাটি আইএমএফের কাছে উপস্থাপন করাকে স্বাগত জানাবে এবং আইএমএফ এই পরিকল্পনায় কাজ করতে সক্ষম হবে:
“এটি তিউনিসিয়ার জন্য একটি সার্বভৌম সিদ্ধান্ত; এই সিদ্ধান্ত আমরা বা অন্য কেউ নিতে পারবে না। তবে এটা স্পষ্ট যে, তিউনিসিয়া যদি প্রবাদপ্রতিম অর্থনৈতিক চূড়া থেকে পতন এড়াতে চায় তবে তার অতিরিক্ত সহায়তা প্রয়োজন।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন তিউনিসিয়াকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে ইইউ যা প্রস্তাব করেছে তার প্রশংসা করেছেন:
"কিন্তু আমাদের বিচারে আইএমএফ আরও ব্যাপক ও সর্বোত্তম কিছু প্রদান করতে পারে। তিউনিসিয়াকে একটি টেকসই এবং ইতিবাচক পথে যেতে সাহায্য করার জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ হবে।"
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন ঘোষণা করেন, "মৌলিকভাবে, কীভাবে এগিয়ে যেতে চায় সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিউনিসিয়ার সরকারকে, প্রয়োজনে উপযুক্ত নমনীয়তার সাথে এবং আমরা আশা করব যে সামনে এগিয়ে যাবার একটি বাস্তবোচিত উপায় আছে। আমরা তিউনিসিয়াকে সফল দেখতে চাই, এবং আমরা তার সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন প্রদান করতে চাই।"
এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিমত সম্বলিত একটি সম্পাদকীয়।