জাতিসংঘের মতে, অনেক ক্ষেত্রেই আফগানিস্তানের পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে।
জাতিসংঘের বিশেষ রাজনীতি সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প প্রতিনিধি রবার্ট উড বলেন, বিশেষ করে, "নারী এবং মেয়েদের বর্তমান পরিস্থিতি, মানবিক সহায়তার অধিকার এবং চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন” এই তিনটি হল সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।
২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে, শিক্ষা এবং কাজের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে জনজীবন থেকে নারী ও মেয়েদের সরিয়ে ফেলার জন্য তালিবান ৫০টিরও বেশি ফরমান জারি করেছে।
রাষ্ট্রদূত উড বলেন, "মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো এই সব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রও এই উদ্দেশ্যে তাদের সাথে যোগ দিচ্ছে।"
“তারা নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিষিদ্ধ করেছে, মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ করেছে এবং আফগান নারীদের এনজিও এবং জাতিসংঘের সাথে কাজ করতে বাধা দিয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলো একেবারে অসমর্থনযোগ্য।”
মানবিক সহায়তা সংস্থার জন্য কাজ করা থেকে নারীদের নিষিদ্ধ করা বিশেষ নিষ্ঠুর এবং অদূরদর্শী পদক্ষেপ, যেখানে আফগানিস্তানের জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি বেঁচে থাকার জন্য সহায়তার উপর নির্ভর করে এবং প্রায় ২ কোটি মানুষ তীব্র অনাহারে ভুগছে।
রাষ্ট্রদূত উড বলেন, “নারীরা সাহায্য বিতরণে অপরিহার্য ভুমিকা পালন করেন। এটা অপরিহার্য যে এনজিও এবং জাতিসংঘের সাথে তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের অনুমতি দেওয়া হয়।”
"আরও ব্যাপকভাবে, অংশীদাররা যারা সেখানে থেকে আফগান জনগণের জন্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদান করছে তাদের কার্যপরিচালনার বিরুদ্ধে তালিবান ক্রমবর্ধমান বিরূপ পরিবেশ তৈরি করেছে।"
“মানবিক সহায়তায় যে কোনো হস্তক্ষেপ বা বাধা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। আমরা অব্যাহত ভাবে আশা করি যেন তালিবান মানবিক নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিনা বাধায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং প্রবাহের জন্য অনুমতি দেয়।”
অবশেষে, জাতিসংঘের একটি নতুন প্রতিবেদনে বন্দীদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ১৬০০টিরও বেশি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
অনেক ক্ষেত্রে, এগুলো হল তালিবান নেতাদের নিজস্ব নির্দেশনার লঙ্ঘন, যাতে নির্যাতন এবং দুর্ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
"ইউএনএএমএ-র প্রতিবেদনে ... অগাস্ট ২০২১ থেকে জুন ২০২৩ এর মধ্যে প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তা এবং আফগানিস্তান জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা, অন্যায়ভাবে আটক, শারীরিক নির্যাতন, এবং দুর্ব্যবহার এবং নিখোঁজের অন্তত ৮০০টি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।"
রাষ্ট্রদূত উড বলেন, "তালিবানকে তাদের ধ্বংসাত্মক পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।"
"নিশ্চয়ই, কাউন্সিলকে অবশ্যই তালিবানের উপর চাপ দিতে হবে যেন তারা আফগান জনগণের সাথে তাদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করার জন্য, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবসান ঘটাতে এবং যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর অনুমতি প্রদানের জন্য গুরুতর সংলাপে যুক্ত হয়।"
এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)