ফেব্রূয়ারি মাসের তৃতীয় সোমবার, আমেরিকান জনগণ 'প্রেসিডেন্টস ডে' বা প্রেসিডেন্ট দিবস পালনের মাধ্যমে অতীতের নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে থাকেনI যে স্মৃতি উৎসব পালনের মাধ্যমে আজ আমরা সকল প্রেসিডেন্টের প্রতি যে শ্রদ্ধা জানাই, মূলতঃ ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট, জর্জ ওয়াশিংটনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর নিমিত্তI
আমেরিকার বিপ্লবী যুদ্ধ ও দেশের প্রথম নির্বাহী রূপে জর্জ ওয়াশিংটন ছিলেন, অত্যন্ত জনপ্রিয়I তাঁকে তখন এবং আজও, দেশের জনক হিসাবে ভাবা হয়ে থাকেI এর কারণ, তিনি ছিলেন একজন সামরিক নেতা, যাকে, সেসময়ে সবচাইতে শক্তিশালী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে, আমেরিকার উপনিবেশের বিজয়ের জন্য কৃতিত্ব দেয়া হয়I তারপর তিনি প্রেসিডেন্টের ভূমিকা কি হবে, তাতে পরিবর্তন আনতে শুরু করেন, যার মাধ্যমে পরবর্তীতে যারা প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের জন্য এক দৃষ্টান্ত গড়ে তোলেনI
ওয়াশিংটন বিশ্বাস করতেন সেই ক্ষমতার ভারসাম্যতা, যেখানে যথার্থভাবে দেশ পরিচালনায় প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হবে যথেষ্ট শক্তিশালী, তবে রাজতন্ত্রের অধিকারকে অনুকরণ করার মতো শক্তিশালী নয়I তাঁর উদ্বেগ ছিল, যে দায়িত্ব পালনের সময় যদি তাঁর মৃত্যু হয়, আর জনগণ যদি ভেবে থাকেন যে, তাঁর নিয়োগ আজীবনের, তাই তিনি দুদফা দায়িত্ব পালন করে পদত্যাগ করেনI
একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাংকলিন ডেলানো রুজেভেল্টের ৪ দফা দায়িত্ব পালন, তবে প্রত্যেক প্রেসিডেন্ট, ওয়াশিংটনের দু দফা দায়িত্ব পালনের উদাহরণ অনুসরণ করেছেনI ১৯৫১ সালে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে সংবিধানের ২২তম সংশোধনীর মাধ্যমে, প্রেসিডেন্টের দু দফা দায়িত্বভার অনুমোদিত হয়I
প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন, আগামীতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বের পথরেখাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছেনI তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতা, সামরিক বাহিনীর ব্যবহার এবং অর্থনৈতিক নীতির মতো সব বিষয়ে উৎকর্ষতার এক মানদণ্ড রচনা করেছেনI
তাই বিস্মিত হওয়ার কিছু ছিল না যখন, ১৮০০ সালের শুরুতে, তাঁর মৃত্যুর পর, ২২শে ফেব্রূয়ারি, জর্জ ওয়াশিংটনের জন্মদিনটি সমগ্র নুতন দেশ, যা তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেখানে বেসরকারিভাবে পালন করা শুরু হয়I তাঁর জন্মদিন পালনটি, ১৯৮৫ সালে সরকারিভাবে জাতীয় ছুটি হিসাবে স্বীকৃত হয়I
পরবর্তীতে আমেরিকান জনগণ অন্য এক মহান নেতা, আব্রাহাম লিংকনকে শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন, যার জন্মদিন ১২ই ফেব্রূয়ারি, ওয়াশিংটনের জন্মদিনের কাছাকাছি থাকায়, পরবর্তীতে ফেব্রূয়ারির তৃতীয় সোমবারটি, সকল প্রেসিডেন্টের সম্মানার্থে জাতীয় প্রেসিডেন্ট দিবস পালন স্বীকৃত হয়েছিলI
'প্রেসিডেন্ট দিবস' পালনের মধ্যে দিয়ে, এই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে, সেসব নেতাদের সাহসিকতা ও প্রত্যয়ের প্রতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সুসময়ে এবং দুঃসময়ে যারা নের্তৃত্ব দিয়েছেন, তাদের প্রতি অভিবাদন জানানো হয়I