ফিনল্যান্ড, সুইডেন,এবং নেটো সদস্যপদের দিকে পথযাত্রা

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ( ফাইল ছবি)

নেটোর সদস্য পদের জন্য ১৮ মে আবেদন জানিয়েছে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। ঐতিহাসিক ভাবে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন সামরিক জোট-নিরপেক্ষ রাষ্ট্র । আর তাদের এই অবস্থানই তাদের জনগণের পছন্দের প্রকাশ। এই তো মাত্র ২০২২ সালের জানুয়ারিতে,ফিনল্যান্ডের জনসংখ্যার মাত্র প্রায় ২০ শতাংশ নেটোর সদস্যপদ লাভের পক্ষে ছিলেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পরে সেই সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৫৩ শতাংশে এবং মধ্য মে নাগাদ প্রায় ৭৬ শতাংশ ফিনল্যান্ড বাসী মনে করেন যে ফিনল্যান্ডের উচিত্ নেটোতে যোগ দেওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, “ ফিনল্যান্ড হচ্ছে একটি স্বাধীন ও মুক্ত সমাজ। এ পরিবর্তনের পেছনে কাজ করেছে জনগণের জোরালো সমর্থন।”

ব্লিংকেন আরও বরেন, “ এই সম্ভাবনা সম্পর্কে ফিনল্যান্ডের জনগণ, সংবাদপত্র ও রাজনীতিকরা খোলামেলা বিতর্ক করেন। আর সে দেশের গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সংসদে এই বিষয়টির উপর যখন ভোট নেয়া হয় তখন ২০০ জন সদস্যের মধ্যে ১৮৮ জন নেটোর সদস্য পদের জন্য ফিনল্যান্ডের আবেদন জানানোর বিষয়টি সমর্থন করেন। এটাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, “ ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের এই আবেদন নেটোর, “উন্মুক্ত দ্বার” নীতিকেই পূণঃনিশ্চিত করে যে নীতিটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই এই জোটের মূল ভিত্তি।

তিনি আরও বলেন, “ এই দ্বার উন্মুক্তই থাকবে যেখানে আমাদের এই বিশ্বাসের প্রকাশ ঘটছে যে প্রতিটি দেশের অধিকার আছে তাদের মিত্র ও অংশীদারদের বেছে নেয়ার এবং যদি তারা চায় , সদস্যতা চাইবার অধিকারও আছে। সেটা কোন উস্কানি নয়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোন হুমকিও নয় । আমরা প্রায়ই এটা বলি তবু এ কথার পুণরাবৃত্তি হওয়া দরকার, “ নেটো এখন এবং সব সময় একটি প্রতিরক্ষামূলক জোট”।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, “ ফিনল্যান্ড ও সুইডেনকে নেটেোতে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে নেটোর ভেতরে কড়া সহমত রয়েছে এবং আমার আস্থা রয়েছে আমরা এই প্রক্রিয়ায় দ্রুত কাজ করে যাবো এবং উভয় দেশের জন্য বিষয়গুলো দ্রুত এগোবে”।

তবে নেটোর সদস্যপদ পাওয়া সহজ নয়, দ্রুতও নয়। প্রার্থী রাষ্ট্রগুলোর এতে সংযুক্ত হবার জন্য প্রয়োজন আবেদনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া। নেটো মিত্র রাষ্ট্রগুলোর সবাইকে শেষ অবধি সদস্যপদ অনুমোদন করতে হবে। আর ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের প্রশ্নে তুরস্ক তাদের বিরোধীতার কথা জানিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ব্লিংকেন অবশ্য বলেছেন,“তুরস্ক যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সে নিয়ে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন সরাসরি তুরস্কের সঙ্গে কাজ করছে”।

তিনি বলনে, “এটা একটা প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় কোন দেশের কোন উদ্বেগ থাকলে সেটা তারা উত্থাপন করে। এর মধ্য দিয়েই আমরা কাজ করি । তুরস্কের সঙ্গে ফিনল্যান্ড আর তুরস্ক এখন ঠিক সেটাই করছে, এবং আমি নিশ্চিত যে এটি এগিয়ে যাবে”।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকনে বলেন, “এই জোটে যুক্ত হবার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ফিনল্যান্ড ও সুইডেনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে এবং আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকছি যে উভয় দেশ শীগগিরই নেটোর মিত্র রাষ্ট্র হবে”।

[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে]