জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্জনগুলো

জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রে দূত মিশেল টেইলার ভাষণ দিচ্ছেন । আগস্ট ১১,২০২২। ফাইল ছবি।

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার বিষয়টি সমর্থন ও সুরক্ষা করেছে এবং সেগুলোর প্রতি শ্রদ্ধার বিষয়টি সামনে তুলে এনেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৬টি সদস্যরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একটি প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র কো-স্পন্সর করে, যেটিতে আরও ৪০টিরও বেশি দেশ কো-স্পন্সর করেছে। প্রস্তাবটিতে রাশিয়ায় অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ। নিরপেক্ষ পর্যালোচনা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবটির মাধ্যমে এক বিশেষ প্রতিবেদকও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

চীনের শিনজিয়াং এর মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে, মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতরের মূল্যায়নটি নিয়ে আলোচনা করতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ৩৫টির বেশি কো-স্পন্সর এক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ঐ মূল্যায়নের উপসংহারে বলা হয় যে, “উইঘুর ও প্রধানত মুসলিম গোষ্ঠীগুলোর নির্বিচার ও বৈষম্যমূলক আটকের ব্যাপ্তি…হয়ত আন্তর্জাতিক অপরাধ, বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল” এবং তাতে উল্লেখ করা হয় যে, “গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন সংঘটিত করা হয়েছে।” পরিষদটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই প্রথমবার এমন ঘটনা ঘটল যে, কোন সদস্য গণপ্রজাতন্ত্রী চীনে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পদক্ষেপ নিতে উদ্যত হয়েছে। সিদ্ধান্তটি সামান্য ব্যবধানে নাকচ হয়ে যায়।

আফগানিস্তান পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদকের সক্ষমতা নবায়ন ও জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রস্তাব কো-স্পন্সর করে, যার মধ্যে রয়েছে নির্যাতনের ঘটনা নথিবদ্ধ, সংরক্ষণ, ও তার খবর জানানো, বিশেষ করে নারী, মেয়ে, ও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীদের উপর নিপীড়নের বিষয়ে।

এছাড়াও ইথিওপিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে পরিষদটির মনোযোগ ধরে রাখা নিশ্চিত করতেও যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রস্তাব কো-স্পন্সর করে।

মূল গ্রুপের সদস্য হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্র, এই অর্থনৈতিক সংকটের মুহুর্তে শ্রীলঙ্কার সরকারের সাথে পরিষদের অব্যাহত যোগাযোগ বজায় রাখতেও একটি প্রস্তাব কো-স্পন্সর করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিগত সময়ে ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সময়ে ঘটা নির্যাতনের ঘটনাগুলোর জন্য জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সমর্থন করা। মানবাধিকার বিষয়ে সুরক্ষা ও শ্রদ্ধা জোরদার করার বিষয়টি, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের সাথে যুগপৎভাবে চলে।

সিরিয়ায় চলমান নির্যাতন ও লঙ্ঘনগুলোর প্রতি, মূলত বাশার আল-আসাদ এর শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক যেগুলো সংঘটিত সেগুলোর প্রতি, আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণে পরিষদের সাথে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

ভেনেজুয়েলায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য নিকোলাস মাদুরোর শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহি করানোর উদ্দেশ্যে, ভেনেজুয়েলা বিষয়ক অনুসন্ধানী মিশনটির মেয়াদ নবায়ন করতে একটি প্রস্তাব কোস্পন্সর করে যুক্তরাষ্ট্র।

মানবাধিকার পরিষদে ফিরে আসার প্রথম বছরটিতে, যুক্তরাষ্ট্র পরিষদটিকে সেসব মূল্যবোধ, আকাঙ্খা, ও নিয়মনীতি প্রতিবিম্বিত ও জোরদার করাতে কাজ করেছে, যেগুলো গত ৭৫ বছর ধরে জাতিসংঘ ব্যবস্থার মূলভিত্তি হয়ে রয়েছে।


[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে]