নতুন বছরের শুরুতেই ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণ বৃদ্ধি

ফা্ইল ছবি: জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক ও শান্তি বিনির্মাণ বিষয়ক এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগের সহকারী মহাসচিব খালেদ খিয়ারি

ইউক্রেনের বেসামরিক জনগণ এবং অবকাঠামোর উপর বেপরোয়া আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে পুরাতন বছরের সমাপ্তি টেনে রুশ ফেডারেশন ঠিক সেভাবেই নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে যা শুধু মানুষ, মানবাধিকার বা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি কোনো সম্মান নেই এমন একটি দেশের কাছেই প্রত্যাশা করা যেতে পারে।

জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক ও শান্তি বিনির্মাণ বিষয়ক এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগের সহকারী মহাসচিব খালেদ খিয়ারির মতে, আসলেই হামলার তীব্রতা বাড়ছে।

২৭শে ডিসেম্বর রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে ১৫৮টি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বড় বিমান হামলা।

“এই হামলাটি কঠোরভাবে মনে করিয়ে দেয় যে, এই বিধ্বংসী যুদ্ধের প্রায় দুই বছর পরেও, পুতিনের উদ্দেশ্য অপরিবর্তিত রয়েছে।

তিনি ইউক্রেনকে ধ্বংস এবং এর জনগণকে পরাধীন করতে চান,” বলেন জন কেলি, জাতিসংঘের যুক্তরাষ্ট্র মিশনের রাজনৈতিক মন্ত্রী কাউন্সেলর।

“শান্তির পরিবর্তে পুতিন জাতিসংঘের আরেকটি সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন সংখ্যার ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে এই ছুটির মৌসুমটি পালন করে নববর্ষের সূচনা করা বেছে নিয়েছেন।

বর্তমান অনুমান হচ্ছে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত এবং ১২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। আর এই সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশব্যাপী বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলি একটি প্রসূতি হাসপাতাল, একটি কিন্ডারগার্টেন, একটি বিপণী কেন্দ্র , একটি মেট্রো স্টেশন এবং অন্যান্য বেসামরিক এলাকায় আঘাত হেনেছে বলে খবর পাওয়া যায়।”

রুশ ফেডারেশন ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের উপর এই ভয়ঙ্কর হামলার সমর্থনে অযৌক্তিক দাবি করে যে তাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ইউক্রেনের কাউকে ক্ষতি করেনি, বরং ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই নিহতদের মৃত্যুর কারণ হয়েছিল।

রাষ্ট্রদূত কেলি বলেন, “ক্রেমলিনের বাগাড়ম্বর এবং মিথ্যা দাবি দেশজুড়ে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ এবং যুদ্ধ শুরুর পর থেকে হারানো হাজার হাজার নিরপরাধ জীবনকে মুছে ফেলতে বা গোপন করতে পারবে না।

“কি বিষয়ে ঝুঁকি আছে এই হামলা আসলেই তার আরেকটি সতর্কবাণী। আর এতে আমরা বুঝতে পারি কেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা দরকার।

এটি আমাদের দেখায় কেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাশিয়াকে তার আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য এবং অবিলম্বে ইউক্রেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অঞ্চল থেকে প্রত্যাহারের জন্য দাবি অব্যাহত রাখবে।”

রাষ্ট্রদূত কেলি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের পাশে আছে এবং ইউক্রেনের জনগণের বিরুদ্ধে রুশ কর্মকর্তা ও তাদের বাহিনীর অপরাধের জন্য জবাবদিহিতার আহ্বান জানাতে থাকবে,

“আমরা ইউক্রেনের সাহসী জনগণকে পরিত্যাগ করব না যারা আজ তাদের স্বাধীনতার জন্য [এবং] তাদের দেশের জন্য লড়াই করছে।”

(এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)