গাজায় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে

দু’ সপ্তাহ ধরে গাজার আল শিফা হাসপাতালে ইসরাইলি হামলার ধ্বংসাবশেষ পরিস্কার করার দৃশ্য

জাতিসংঘের মতে, গাজায় সহিংসতার মানবিক প্রভাব বিপর্যয়মূলক হয়ে উঠছে এবং দিন দিন খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়কারী টর ওয়েনেসল্যান্ড বলেন, “মে মাসের শেষের দিকে গাজার দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ভয়াবহ মাত্রার মুখোমুখি হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে এবং গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ আসন্ন।”

তিনি উল্লেখ করেন যে ইতোমধ্যেই অনাহারজনিত মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, বলেন বিশেষ রাজনীতি বিষয়ক জাতিসংঘের যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প প্রতিনিধি, রবার্ট উড।

“বাস্তবতা হল গাজায় শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে কারণ মানবিক সহায়তা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।

গাজা বা অন্য যেকোন জায়গায় যেন অপুষ্টির কারণে কোনও শিশু মারা না যায়। গাজার জনসংখ্যার শতভাগ মানুষ মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।”

রাষ্ট্রদূত উড বলেন, “যদিও আমরা যে যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি তা সর্বোত্তম হবে, মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্যও সবচেয়ে তাত্ক্ষণিক পন্থা হবে। তবে এটিই একমাত্র উপায় নয়,আমরা একটি জলপথে করিডোর প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগ সমন্বয় করে যাচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে মানবিক সহায়তার জন্য অতিরিক্ত মাধ্যম হিসাবে একটি ভাসমান বন্দর নির্মাণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মিশনের প্রতি সমর্থন প্রদান।আমরা গাজায় বিমানের মাধ্যমেও মানবিক সহায়তা প্রদান চালিয়ে যাচ্ছি।এই সামুদ্রিক করিডোর এবং এয়ারড্রপগুলি ত্রাণ সহায়তায় একটি সংযোজন, আর গাজায় প্রবেশ করতে এবং এর সর্বত্র আসন্ন দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করতে দ্রুত ভূমির মাধ্যমে প্রবেশ সুবিধার বিকল্প নয়”।

এদিকে, আমরা রাফাতে সামরিক স্থল অভিযান চালানোর বিরুদ্ধে ইসরাইলি সরকারকে ক্রমাগত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

রাষ্ট্রদূত উড বলেন, “তাতে আরও বেসামরিক জনগণকে হত্যার ঝুঁকি তৈরি হবে এবং তা মানবিক সহায়তার বিধানের আরও ব্যাপক বিপর্যয় ঘটাতে পারে,সর্বশেষে, আমরা

ইসরাইল এবং গাজায় দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি।”

“যেমনটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেছেন, গাজাকে সন্ত্রাসবাদের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না; এর জনসংখ্যার কোনও বাস্তুচ্যুতি হতে পারে না; ইসরাইল দ্বারা এর অঞ্চল হ্রাস বা পুনর্দখল করা যাবে না। আর আমরা একমত যে, এটি করতে হলে ইসরাইলের জন্য সত্যিকারের নিরাপরত্তার নিশ্চয়তা সহ দুই রাষ্ট্র সমাধানের দিকে যাওয়ার পথ প্রয়োজন।”

“তবে এর জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রকৃত সংস্কার প্রয়োজন। আর যদিও আমরা সেই দিকে কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ দেখেছি, এর জন্যে আরও পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অধীনে পশ্চিম তীরের সাথে গাজার একীভূত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনের জন্য গাজার ফিলিস্তিনিদের সহ আরও ভাল, আরও প্রতিনিধিত্বশীল সরকার দিয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে পুনরুজ্জীবিত করা গুরুত্বপূর্ণ।”

(এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)