শরণার্থী সংখ্যা বাড়ছে, প্রয়োজন আরও মানবিক সহায়তা

দক্ষিণ সুদানের জুবায় শরণার্থীরা শিবিরে পানি সংগ্রহ করছে। ফাইল ফটোঃ ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডির মতে, সর্বশেষ গণনায়, যুদ্ধ, সহিংসতা এবং নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১১ কোটি ৪০ লক্ষে পৌঁছেছে। এই মাসে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই ক্রমবর্ধমান বিপর্যয়ের একটি অন্যতম প্রধান কারণ হল যে প্রায় সব পক্ষই যুদ্ধের মৌলিক নিয়ম মেনে চলা বন্ধ করে দিয়েছে। ক্রমেই, বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, ধর্ষণ এবং যৌন সহিংসতা যুদ্ধের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর যেহেতু এই নৃশংস আচরণগুলো মানুষদের আতঙ্কিত করার জন্য, তাই বেসামরিক লোকদের পালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। কিন্তু যত বেশি মানুষের সহায়তা প্রয়োজন, ততই কম সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে, এবং মানবতাবাদীরা তাদের সহনসীমার মাত্রায় পৌঁছেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অল্টারনেটিভ রেপ্রেসেন্টেটিভ ফর স্পেশাল পলিটিকাল অ্যাফেয়ারস রবার্ট উড বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র শরণার্থীদের এবং তাদের আতিথ্যকারী দেশগুলিকে সমর্থন করার জন্য বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে।”

“যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম একক মানবিক দাতা। শুধুমাত্র ২০২৩ অর্থবছরেই, আমরা আমেরিকার জনগণের পক্ষে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের মানবিক সহায়তা দিয়েছি।”

“ আমরা ২০২৩সালে ৬০,০১৪ জন পুনর্বাসিত শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানিয়েছি এবং আমরা এই বছর ১০০,০০০ জন বা তারও বেশি শরণার্থীদের আগমনের পথে রয়েছি৷ আমরা আমাদের অংশ করছি, এবং আমরা অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে আরও কিছু করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি," রাষ্ট্রদূত উড বলেন।

“আমরা গর্বিত যে আমাদের শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচি এই অর্থবছরে ৯৫টি আয়োজক দেশ থেকে ৭৯টি জাতীয়তার শরণার্থীদের বিশ্বের প্রতিটি মহাদেশ এবং প্রান্ত থেকে নিয়ে এসেছে। আমরা বিশ্বাস করি যে কোনও শিক্ষা-সংস্কৃতি থেকে এবং দক্ষতা নিয়ে আসা সকল শরণার্থী তৃতীয় দেশে পুনর্বাসন সহ স্থিতিশীল সমাধানের যোগ্য। এই প্রশাসন বিশ্বজুড়ে নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা এলজিবিটিকিউআই+ শরণার্থীদের পুনর্বাসনে সহায়তা করার জন্য বিশেষভাবে গর্বিত।”

শরণার্থীদের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, রাষ্ট্রদূত উড বলেন, “আজকের এই জটিল জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি সঙ্কটকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য আমাদের মানবিক অর্থায়ন, উন্নয়ন প্রচেষ্টা এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন।”

“আমাদের শরণার্থী এবং অভিবাসীদের নিরাপদে এবং মর্যাদার সাথে চলাফেরা করার জন্য বৈধ পথ সহ স্থানীয় এবং আঞ্চলিক সমাধানগুলির উপর আরও জোর দেওয়া দরকার। মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকায় দ্য সেইফ মোবিলিটি অফিস (নিরাপদ গতিশীলতা বিযয়ক কার্যালয়) এই ক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে।”

“আমরা মানবিক প্রতিক্রিয়া, আত্মনির্ভরশীলতা এবং স্থিতিশীল সমাধানের ভিত্তি হিসাবে নিরাপত্তার প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের উপর অবিচল রয়েছি, যার ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের স্ব-শনাক্ত করা মানবিক চাহিদা," রাষ্ট্রদূত উড বলেন। "আজ বিশ্বজুড়ে শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী এবং রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের অঙ্গীকার প্রয়োজন।”

(এটি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)