জাতিসংঘ যখন ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, বিশ্বের অনেক অঞ্চল তখন বিধ্বস্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের পর নতুন এই আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক সমস্যায় জর্জরিত দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা অর্জন করা।
অনেক কিছু ১৯৪৫ সালের পর থেকে পরিবর্তন হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য জাতিসংঘের প্রধান সংস্থা, নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধ-পরবর্তী ক্ষমতার কাঠামো প্রতিফলন করে: স্থায়ী আসনগুলির মধ্যে চারটি এখনোপশ্চিমা শক্তির দখলে রয়েছে, চীন পঞ্চম আসনটি ধরে রেখেছে। আজ, আফ্রিকার ৫৪টি দেশ জাতিসংঘের সদস্যদের মধ্যে ২৮ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। কিন্তু তারপরও, নিরাপত্তা পরিষদে তাদের কোনো স্থায়ী প্রতিনিধি নেই।
এই ধরণের এবং অনুরূপ সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সামিট অফ দ্য ফিউচার নামে একটি শীর্ষ সম্মেলন করে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি রোডম্যাপ অনুমোদন করে: ভবিষ্যতের জন্য চুক্তি৷
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, “জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য আমাদের জরুরীভাবে সমর্থন, সংস্কার এবং সঞ্জীবনী শক্তি পুনরুদ্ধার করা প্রয়োজন।”
“এ কারণেই আমরা ভবিষ্যতের জন্য চুক্তিতে ব্যাপক পরিসরের অগ্রাধিকারগুলির রুপায়ণ এবং সম্পন্ন করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার জন্য সদস্য দেশগুলির সাথে যোগ দিয়েছি।”
তিনি বলেন, “এর মধ্যে উন্নয়নশীল বিশ্ব এবং আরও বিস্তৃতভাবে বললে আজকের বিশ্ব ঠিক যেরকম তা আরও ভালভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার রয়েছে।”
“যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে এই পরিষদে আফ্রিকার জন্য দুটি স্থায়ী আসন, উন্নয়নশীল ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একটি পরিবর্তনশীল আসন, ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ানদের জন্য স্থায়ী প্রতিনিধিত্ব, সাথে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন করেছি এমন দেশ: জার্মানি, জাপান , ভারতের জন্য স্থায়ী আসন অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।”
“যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৫ সালে যেই ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল সেটি নয় বরং আজকের এবং আগামীর এই বিশ্বকে প্রতিফলিত করতে পারবে এমন জাতিসংঘের ব্যবস্থাকে মানিয়ে নিতে অঙ্গীকারবদ্ধ, ” সেক্রেটারি ব্লিংকেন বলেন। "কিন্তু আমরা পরিবর্তনবাদের বিপক্ষে ছিলাম এবং সবসময় থাকব।"
“আমরা জাতিসংঘ সনদের মূল নীতি সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, স্বাধীনতাকে নষ্ট করার, দূর্বল বা মৌলিকভাবে পরিবর্তন করার কোনও প্রচেষ্টা গ্রহণ করব না," তিনি বলেন। "আমরা মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা এবং এ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তিগুলিকে দুর্বল করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্রভাবে লড়াই করব।”
“ভবিষ্যতের জন্য চুক্তিটিতে প্রতিটি অগ্রাধিকার, বা জাতিসংঘের প্রয়োজনীয় সকল সংস্কার অন্তর্ভুক্ত করা নেই," সেক্রেটারি ব্লিংকেন বলেন, "তবে এটি এই প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী এবং বিকশিত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যা প্রতিটি সদস্য-রাষ্ট্রের সমর্থন করা উচিত এবং তা অর্জনে কাজ করা উচিত।”
(এটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)