বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি

আফ্রিকার চাদের কুফ্রু শরণার্থী শিবিরে স্বাস্থ্যকর্মী ইজাবেল মামাবে চরম অপুষ্টিতে ভোগা এক সুদানি শিশুকে পরীক্ষা করছেন। ফাইল ফটোঃ ৯ এপ্রিল, ২০২৪।

বিশ্ব স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ মানুষকে সর্বত্র সুরক্ষা প্রদান করে, এ বিষয়ে খুব কমই সন্দেহ রয়েছে। এটি স্থানীয় রোগ এবং বিশেষ করে দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সমস্যায় জর্জরিত দেশগুলোতে মানুষের জীবন রক্ষা করে। এটি দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে শক্তিশালী করে এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে উৎসাহিত করে। এছাড়াও, সংক্রামক রোগের প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বৈশ্বিক সংক্রমণ রোধে সহায়তা করে।

বিগত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ঘটনাগুলির মধ্যে একটি হল মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সামান্থা পাওয়ার গত বছর এক বক্তৃতায় বলেন, “ গত শতাব্দীর শুরুতে, মানুষের গড় আয়ু ছিল ত্রিশের ঘরে। আজ, তা সত্তরেরও বেশি। ”

তিনি বলেন, “ গল্পটি শুরু হয় অসাধারণ বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের ধারাবাহিকতার মাধ্যমে।”

“মানবতার সর্বশ্রেষ্ঠ জীবনরক্ষাকারী উদ্ভাবনগুলোকে পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার এই বৈশ্বিক প্রচেষ্টার ফলেই গত ত্রিশ বছরে মাতৃমৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ এবং শিশুমৃত্যুর হার ৬০ শতাংশ কমেছে । আর বিশ্বব্যাপী গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে সত্তরের কোটায় পৌঁছেছে।”

অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাওয়ার বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য কার্যকর, এটা ঠিকই কাজ করে।”

এই কারণেই ইউএসএআইডি তিনটি কৌশলগত অগ্রাধিকারকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, তাদের শক্তিশালীকরণ এবং যুগান্তকারী উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করে। সেগুলো হল শিশু ও মাতৃমৃত্যু প্রতিরোধ; এইচআইভি/এইডস মহামারী নিয়ন্ত্রণ; এবং সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা।

নভেম্বরের শুরুতে, ইউএসএআইডি এই দুটি অগ্রাধিকারে আরও বিনিয়োগ করার ব্যাপারে ঘোষণা দেয়। প্রথমত, সংক্রামক রোগ সনাক্তকরণ সিস্টেম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পটি সংক্রামক রোগের হুমকির ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি ও তীব্রতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে অংশীদার দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। ইউএসএআইডি শক্তিশালী বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য নিরাপত্তা এবং মহামারীর বিরুদ্ধে প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট উপাদানগুলিকে শক্তিশালী করতে ৫০ টিরও বেশি দেশে কাজ করে।

দ্বিতীয়ত, ইউএসএআইডি গ্লোবাল ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটিকে অতিরিক্ত ২ কোটি ৬৭ লক্ষ ডলার প্রদান করছে। জিএফএফ হল বিশ্বব্যাংক আয়োজিত দেশের মাধ্যমে পরিচালিত একটি অংশীদারিত্ব, যা নারী, শিশু এবং কিশোরদের স্বাস্থ্য ও অধিকার রক্ষা করার মাধ্যমে দেশগুলোকে তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালী করে গর্ভবতী নারী, নতুন মা এবং শিশু সহ সকলের চিকিৎসাসেবা পাওয়ার অধিকার উন্নত করতে সহায়তা করে।

যেসব দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্য কর্মী বাহিনীর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, সেসকল দেশ প্রমাণিতভাবে ফলাফল প্রদান করে, সেবা প্রদানে বিস্তার ঘটায় এবং বিভিন্ন প্রতিরোধযোগ্য রোগের কারণে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হ্রাস করে। ইউএসএআইডি অংশীদার দেশের সাথে মিলিতভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের কাজ করছে, যাতে জীবনযাত্রার আয়ুষ্কালের বৈষম্য কমানো এবং স্বাস্থ্য সংকটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠন করা সম্ভব হয়।

(এটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)