সিরিয়ার ভবিষ্যতের জন্য উত্তেজনা প্রশমন ও সংলাপই প্রধান পথ

সিরিয়ার বিরোধী যোদ্ধারা মঙ্গলবার সিরিয়ার হামার উপকণ্ঠে একটি জব্দকৃত সামরিক সাঁজোয়া যানের উপরে দাঁড়িয়ে আছে, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪।

সিরিয়ার দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরোধী, ইসলামপন্থী বাহিনী গত মাসে আকস্মিক এক হামলায় দেশটির বৃহত্তম শহর আলেপ্পো দখল করে। ফলে, সিরিয়ায় তীব্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।

এরপর থেকে দেশটিতে সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়েছে। বিদ্রোহী বাহিনীরা ইসলামপন্থী দল হায়াত তাহরির আল-শামের নেতৃত্বে, আলেপ্পোর দক্ষিণে সরকার নিয়ন্ত্রিত অবস্থানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

আসাদের মিত্র রাশিয়া এবং ইরান আসাদের প্রতি সমর্থনের অঙ্গীকার দিয়েছে। তারা ২০১১ সালে সরকার বিরোধী বিক্ষোভের কারণে একটি নৃশংস গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে তাকে ক্ষমতায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

একটি সাম্প্রতিক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র শন স্যাভেট উদ্ভূত সংকটের জন্য "আসাদ সরকারের ইউএনএসসিআর ২২৫৪-এ বর্ণিত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার প্রতি বারবার অস্বীকার এবং রাশিয়া ও ইরানের উপর তার নির্ভরতাকে দায়ী করেন।"

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার যেমনটি উল্লেখ করে বলেন, জাতিসংঘের মাধ্যমে পরিচালিত রেজোলিউশন ২২৫৪ সহজতর একটি প্রক্রিয়া আহ্বান করে যাতে সিরিয়ার সরকার এবং বিরোধী দলগুলি সিরিয়ার ভবিষ্যতের জন্য পথনির্দেশ নিয়ে আলোচনা করবে।

“এটি গুরুত্বপূর্ণ যে সেই পথটি সিরিয়ার নেতৃত্বাধীন হবে এবং তাতে এমন একটি প্রক্রিয়া থাকবে যা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে। আমরা দীর্ঘমেয়াদে এটাই দেখতে চাই, তবে স্বল্পমেয়াদে, আমরা পরিস্থিতির অবনতি হ্রাস এবং বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা দেখতে চাই।”

মুখপাত্র মিলার বলেন, সিরিয়ার সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতির ক্ষেত্রে “কিছুই পরিবর্তন হয়নি”।

“আসাদ একজন নৃশংস স্বৈরশাসক যার হাত রক্তে ভরা। ... পরিশেষে, আমরা যা দেখতে চাই তা হল একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া আসবে যেখানে সিরিয়ার জনগণ তাদের নেতা কে তা নির্ধারণ করতে পারবে।”

মুখপাত্র মিলার জোর দিয়ে বলেন, “রাশিয়া এবং ইরান যদি সিরিয়ার ভেতরে তাদের অস্থিতিশীল প্রভাব বন্ধ করত, তবে তা অত্যন্ত সহায়ক হবে। আমরা দেখেছি যে তারা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে আসছে। তারা এমন একটি ভূমিকা পালন করে চলেছে যা কেবল সিরিয়ার জনগণের জন্যই নয়, বরং বৃহত্তর অঞ্চলের জন্যও সহায়ক নয়।”

হায়াত তাহরির আল-শামকে যুক্তরাষ্ট্র একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। মুখপাত্র মিলার জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে “যেকোনোভাবে বা যেকোনো রূপে” সমর্থন করে না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র “আসাদ সরকারের জন্য যা সমর্থন করে তা হল, জনগণের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে তারা নিজের জনগণের সঙ্গে একটি সংলাপ এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করুক। ”

(এটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)