সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল বর্তমানে প্রায় ১০,০০০ প্রাক্তন আইএসআইএস যোদ্ধাদের আবাসস্থল। এই গোষ্ঠী বিশ্বের সন্ত্রাসীদের সবচেয়ে বড় কেন্দ্রবিন্দু। তাদের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৫,০০০ সিরীয়, ৩,০০০ ইরাকি এবং সিরিয়া ও ইরাকের বাইরের ৬০টি দেশের ২,০০০ বিদেশী যোদ্ধা। ২০১৯ সালের গোড়ার দিকে আইএসআইএস-কে পরাজিত করার জন্য জোটের সমর্থনে সিরীয় গণতান্ত্রিক বাহিনী এদের বেশিরভাগ জনকে বন্দী করেছিল, কারণ আইএসআইএস সিরিয়ায় তার শেষ ঘাঁটি বাঘুজ শহরটিকে ধরে রাখার চেষ্টা করে এবং ব্যর্থ হয়।
বর্তমানে, এই লোকেরা এক আল হোল শহরের উপকণ্ঠে সমনামের বন্দি শিবিরে বাস করে। আল হোল এবং অন্য একটি শিবির রোজ স্থাপনায় তাদের সঙ্গে রয়েছে তাদের পরিবারগুলি: প্রায় ৫৬,০০০ অ-যোদ্ধা, যার মধ্যে ছোট শিশুরাও রয়েছে ; এদের মধ্যে কেউ কেউ এই বন্দি শিবিরেই জন্মগ্রহণ করেছিল।
এই লোকেরা তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে যদিও গত এক বছরে প্রত্যাবাসনের হার বেড়েছে, এই বন্দীদের নিজেদের দেশগুলি প্রায়শই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে অনিচ্ছুক বা এ ব্যাপারে ধীরগতি দেখাচ্ছে। যেসব বন্দীকে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
"যদিও নারী ও শিশুদের প্রত্যাবাসন গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরী, কঠিন সত্যটি হল যে, দেশগুলিকে অবশ্যই আটক ও পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলিতে থাকা পুরুষ এবং যুবকদের প্রত্যাবাসন দিতে হবে," বলেছেন ইয়ান মস। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা বিষয়ের উপ-সহকারি সমন্বয়ক এবং সন্ত্রাসী আটক ও সহিংস উগ্রবাদ মোকাবিলার দায়িত্বপ্রাপ্ত।
“আমরা বারবার শুনেছি নেতারা বলছেন যে, তাদের দেশীয় জনগণ প্রত্যাবাসনের বিরোধী। তারা যুক্তি দেয় যে যোদ্ধারা, যদি তাদের সফলভাবে বিচার করা হয়, তাহলে কারাগারের জনগণকে উগ্রপন্থি করে তোলার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তারা উদ্বেগও প্রকাশ করে,"যে-সকল প্রত্যাবর্তনকারীর বিচার করতে অক্ষম, তারা ভবিষ্যতে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করতে পারে বা সহিংসতার প্রচার করতে পারে।"
প্রকৃতপক্ষে, সহিংসতা এবং পূর্বের অপরাধে প্রত্যাবর্তন করে উগ্রবাদের ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু বিকল্প—আইএসআইএসের সম্ভাব্য পুনরুত্থান—আরও খারাপ। মিস্টার মস বলেন,"আইএসআইএস এই বন্দি যোদ্ধাদের মুক্ত করার চেষ্টা করে তার পদ পুনরায় পূরণ করার জন্য নতুন সুযোগের সন্ধান করে চলেছে।'' তিনি আরও বলেন,"তারা যদি পালিয়ে যায়, তবে তারা কেবল উত্তর-পূর্ব সিরিয়া এবং এই অঞ্চলের জন্যই নয়, আমাদের মাতৃভূমির জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এটি প্রতিরোধ করার সর্বোত্তম উপায় হল, এই ব্যক্তিদের প্রত্যাবাসন করা যাতে তাদের পুনর্বাসিত করা যায়, পুনরায় একত্রিত করা যায় এবং উপযুক্ত স্থানে বিচার করা যায়।"
"শিবির এবং আটক কেন্দ্র—উভয় ক্ষেত্রেই জনসংখ্যা হ্রাস করা আমাদেরকে কেবলমাত্র আরও নিরাপদ করে তোলে না, বরং সমস্যাটিকে আরও নিয়ন্ত্রণযোগ্য করে তোলে।"
এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিমত সম্বলিত একটি সম্পাদকীয়।