বার্মায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থান ২০১১ সাল থেকে কঠিন লড়াইয়ের মাধ্যমে গণতন্ত্রের দিকে অর্জিত অগ্রগতির অনেকটাই মুছে দিয়েছে, কংগ্রেসে দেওয়া সাম্প্রতিক সাক্ষ্যতে এ কথা বলেন গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং শ্রম বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী এরিন বার্কলে।
“বার্মার সামরিক সরকার একটি দীর্ঘস্থায়ী জরুরি অবস্থার অধীনে অনেক নাগরিক স্বাধীনতা স্থগিত করেছে। ... দেশটির সরকার বিভিন্ন নতুন আইনও প্রবর্তন করেছে যা মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সম্মিলন এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে অকার্যকরভাবে সীমাবদ্ধ করে। দেশটির সরকার সামাজিক গণযোগাযোগ মাধ্যমগুলিসহ ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকার ব্যাহত করেছে, স্বাধীন গণমাধ্যমগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে এবং কমপক্ষে ৪২ জন সাংবাদিককে বন্দী করেছে।”
ভারপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী বার্কলে বলেন, দেশটির সামরিক জান্তা নারী ও মেয়েদের বিশেষ করে লক্ষ্যবস্তুতে করেছে।
“সামরিক জান্তা কয়েক দশক ধরে নারী ও মেয়েদেরকে ভীতসন্ত্রস্ত করতে যৌন সহিংসতা সহ জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা ব্যবহার করছে এবং তারা ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে এই কৌশলটির ব্যবহার বাড়িয়েছে।বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা ধর্ষণ, গণধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, যৌন হয়রানি এবং... মানব পাচার সহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার কথা জানিয়েছে, যার বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনী, বিশেষ করে সামরিক বাহিনী দ্বারা সংঘটিত হয়।"
ভারপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী বার্কলে বলেন, একটি অধিকার সংগঠন অ্যাসিস্টেন্স এসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজানার্স’এর মতে, অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক শাসনের দ্বারা প্রায় ৪০০০ লোক নিহত হয়েছে এবং ২৪,০০০ জনেরও বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে, যার মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট এবং রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিও রয়েছেন।
“আমরা তাদের পাশাপাশি ক্রমাগতভাবে বার্মায় অন্যায়ভাবে আটককৃত সকলের মুক্তির জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। অনেক প্রাক্তন বন্দী তাদের আটকের সময় নির্যাতন এবং অন্যান্য দুর্ব্যবহারের ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার দেখেছেন যে অভ্যুত্থানের পর থেকে অন্তত ২৭৩ জন মানুষ পুলিশ বা সামরিক হেফাজতে থাকতে মারা গেছে।”
যুক্তরাষ্ট্র একটি সমন্বিত প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছে যা বার্মার জনগণের তাত্ক্ষণিক মানবাধিকার প্রতিকুলতা সম্পর্কে এবং সততা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য উভয়ই উপস্থাপন করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে সামরিক শাসনের সহিংসতার বিরুদ্ধে নৃশংসতা প্রতিরোধের সরঞ্জাম তৈরি করতে গণতন্ত্রপন্থী প্রতিষ্ঠানদের প্রতি সমর্থন সম্প্রসারণ করা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর সুশীল সমাজের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে এনে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন আরো জোরালো করে তুলছে যাতে তারা বার্মায় গণতান্ত্রিক শাসনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
ফেব্রুয়ারী ২০২১ থেকে, পররাষ্ট্র দফতর ১০০০টিরও বেশি মানবাধিকার কর্মী এবং সুশীল সমাজের সমর্থকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বার্মায় অতীত এবং চলমান উভয় ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতা প্রচারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
(এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)