জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া সাম্প্রতিক মন্তব্যে উল্লেখ করেন, রাশিয়ার সহায়তায় সিরিয়ার সরকার অব্যাহতভাবে ইদলিব এবং আলেপ্পো প্রদেশে নির্মম বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, শত শত বেসামরিক লোককে হত্যা করছে।
““আরও গুরুতর, আসাদ সরকারের নেতৃত্বে করা আক্রমণগুলো বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবু ধ্বংস করেছে, রুশ বিমান হামলার সাহায্যে করা আক্রমণগুলোর লক্ষ্য ছিল ইদলিবের পশ্চিম অংশ।”
রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, “আমরা ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাসদস্য এবং স্থাপনা গুলোতে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলির হামলারও নিন্দা জানাই।”
“অন্য যেকোন সদস্য রাষ্ট্রের মতোই, যুক্তরাষ্ট্রের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, যা জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে।”
''তাই, আমরা নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলা পরিচালনা করেছি। এবং আমরা আরও আক্রমণের হুমকি মোকাবেলায় যতটুকু প্রয়োজনীয় এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ দরকার, তার জন্য প্রস্তুত আছি।''
নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র কাতায়েব সায়্যিদ আল-শুহাদা এবং এর মহাসচিবকে বিশেষ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসাবে চিহ্নিত করে।
রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, “এ ছাড়া, আমরা ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া [গোষ্ঠী] কাতায়েব হিজবুল্লাহর সাথে যুক্ত ছয় ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছি,”
“ইরান ইসলামী বিপ্লবী গার্ড কোর-কুদস ফোর্সের মাধ্যমে এই সকল এবং অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীকে সমর্থন করেছে।
''ইরান তাদের প্রশিক্ষণ, তহবিল এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করেছে, যার মধ্যে উন্নতমানের প্রাণঘাতী চালকবিহীন বিমান ব্যবস্থা রয়েছে।
''এই উত্তেজনামূলক আচরণ অগ্রহণযোগ্য। এবং এটি আজ সিরিয়ার বেসামরিক নাগরিকরা যে নিপীড়নমূলক এবং ভয়াবহ অর্থনৈতিক অবস্থার মুখোমুখি তা মোকাবেলার জন্য কিছুই করে না।”
দুর্ভাগ্যবশত, সিরিয়ার সরকার রাজনৈতিক অঙ্গনে অগ্রগতি অর্জনের সমস্ত প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করেছে, যা ভয়ানক পরিণতির দিকে নিয়ে যাছে, রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড সতর্ক করেনঃ
“ফলে, সিরিয়ার জনগণ দলে দলে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে, এবং শরণার্থীরা ফিরে আসতে চাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না।
''অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে নয়, যা সরকার বলতে চায়। বরং তারা ভয় পায় সরকারের নিপীড়ন আর নির্যাতন, নির্বিচারে আটক এবং জোরপূর্বক গুম; সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগ, এবং যৌন ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা।''
রাষ্ট্রদূত টমাস-গ্রিনফিল্ড সিরিয়ার সরকারের নির্বিচারে আটক বা জোরপূর্বক নিখোঁজ হওয়া দেড় লাখেরও বেশি মানুষকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়াও তিনি আসাদ সরকারকে জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বাব আল-হাওয়া ক্রসিংয়ের অনুমোদন বাড়ানোর আহ্বান জানান, যাতে শীতের মাসগুলিতে হাজার হাজার সিরীয় বেসামরিক মানুষের মানবিক চাহিদা পূরণ করা যায়।
রাষ্ট্রদূত টমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, “তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সিরিয়ার জনগণ যখন তাদের মৌলিক স্বাধীনতা এবং আরও ন্যায্য এবং শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করছে, তখন তাদের সাথে দাঁড়ানোর জন্য আমরা এই পরিষদকে আহ্বান জানাই।”
(এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিমত সম্বলিত সম্পাদকীয়)