যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ১৭ই ডিসেম্বর ভিয়েনায় যে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন বা জেসিপিওএ'র শর্ত মানা বিষয়ক সপ্তম দফা আলোচনার কথা ছিল তা স্থগিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, জেইক স্যালিভান বলেন, মুলতুবি হয়ে যাওয়ার কিছুদিন আগে “আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনার আলোচনায় কিছুটা সাফল্য অর্জিত হলেও”, এই আলোচনা “ভালোভাবে এগোচ্ছে না, এই অর্থে যে জেসিপিওএতে ফিরে যাওয়ার পথ এখনো আমরা পাই নি"। ২৯শে নভেম্বর সর্ব-সাম্প্রতিক আলোচনা শুরু হওয়ার আগে ইরানে নতুন একটি প্রেসিডেন্সিয়াল প্রশাসন গঠিত হওয়ার কারণে আলোচনা ৫ মাসের জন্য স্থগিত রাখা হয়।
ইরান আলোচনায় ফিরে আসার পর তারা যে প্রস্তাব দেয় তাতে পূর্ববর্তী প্রশাসনের দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলিকে অগ্রাহ্য করা হয়, যার কারণে ইউরোপের ৩টি দেশ, ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্র, তেহরানের আন্তরিকতার ওভাব ছিল বলে দোষারোপ করে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ৩টি দেশ বা ই-থ্রি সম্মত হয় যে সাম্প্রতিক মুলতুবির আগে কিছুটা কারিগরি সাফল্য অর্জিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ৩টি দেশের কর্মকর্তারা জানান প্রস্তাবের পাঠ্য বিষয় অন্তত একটা বোঝাপড়া হয়েছে, যা আগামী আলোচনায় ভিত্তি হিসাবে কাজ করবে। তবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্যালিভান হতাশা ব্যক্ত করে বলেন যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ক “আলোচনা এ বছর পুনরায় শুরু করাটা, যতটুকু আমরা আশা করেছি তার চাইতে বেশি দুষ্কর বলে প্রমাণিত হয়েছে"।
বিশেষত সবচাইতে বিপদজ্জনক হচ্ছে ২০১৯ সাল থেকে ইরান জেসিপিওএ'র বেঁধে দেয়া সীমার বাইরে আগ্রাসীভাবে তাদের কর্মসূচি সম্প্রসারণ করেছে। বর্তমান ইরান ৬০ শতাংশ হারে ইউরেনিয়াম বিশুদ্ধ করছে এবং তারা আন্তর্জাতিক পরমাণু জ্বালানি এজেন্সী বা আইএইএ এর সঙ্গে সহযোগিতা সীমিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ৩টি দেশ গভীর মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, ইরানের পরমাণু প্রক্রিয়ার অগ্রগতি শীঘ্রই এমন এক পর্যায়ে যাবে, যখন ই-থ্রি'র ভাষায় জেসিপিওএ "এক মূল্যহীন সংস্থায় পরিণত হতে পারে"।
তবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক আলোচনার একটি উজ্জ্বল বিষয় হলো চীন ও রাশিয়াসহ পি-৫ ও অন্যান্য দেশগুলি এখন একটি চুক্তির স্বীকৃতিতে একতাবদ্ধ। বিশ্বশক্তিবর্গের মিলিত দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে ইরানকে কি করে পরমাণু অস্ত্র আহরণ থেকে বিরত রাখা যায়। তিনি বলেন "কূটনীতির মাধ্যমে তা অর্জন করাটাই হবে সর্বোত্তম পন্থা; আর যদি কূটনীতির মাধ্যমে তা হাসিল না হয়, তবে বিকল্প পন্থায় তা অর্জন হবে গভীর সঙ্কটময়। তাই চুক্তি সম্পাদন করার বেলায় দর কষাকষিতে সমাধানের জন্য চাপ দিতে এই পন্থা ইরানিদের কিছুটা অনুপ্রেরণা দিতে পারে"।
[[এই সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতির প্রতিফলন রয়েছে]]